নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে উত্তক্ত করার ঘটনায় ইমতিয়াজ আহাম্মেদ রাসেল নামের এক কথিত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১ (সেপ্টেম্বর) সকালে আলী আকবর বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বাদী আলী আকবর লিখিত অভিযোগে জানান, তার মেঝো মেয়ে নারায়ণগঞ্জ সরকারী মহিলা কলেজে অর্নাসের ১ম বর্ষে পড়াশুনা করেন। কলেজে আসা যাওয়ার পথে দীর্ঘদিন ধরে বখাটে ইমতিয়াজ আহাম্মেদ রাসেল তার মেয়েকে প্রেম নিবেদন করা সহ বিভিন্ন অঙ্গ ভঙ্গি দেখিয়ে উত্যক্ত করে আসছিল। এসময় তার মেয়ে বখাটে রাসেলের প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যক্ষান করাসহ ঘটনার বিষয়ে পরিবারের লোকজনকে জানালে রাসেলকে এমন কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার জন্য নিষেধ করার পরও বখাটে রাসেল কোন কর্নপাত না করে পূর্বের ন্যায় কলেজে আাসা যাওয়ার পথে উত্যক্ত করা অব্যাহত রাখে। এমনকি বখাটে রাসেল তার মেয়েকে হুমকি প্রদান করে যে, প্রেমের প্রস্তাবে তার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে রাজী না হলে সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করার জন্য মিথ্যা বানোয়াট, ভিত্তিহীন, কমেন্ট ও পোষ্ট দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সামাজিকভাবে হেওপ্রতিপন্ন করা হবে। এঅবস্থায় বখাটে রাসেলের অব্যাহত এমন কর্মকান্তে অতিষ্ট হয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্তসহ কলেজে যাওয়া আসা বন্ধ করে দেয় তার মেয়ে। সবশেষ, গত ইং ২৪/০৮/২০২৩ তারিখ সকাল অনুমান সাড়ে ৯টায় তার মেয়ে কলেজে যাওয়ার পথে বাহির হয়ে ফতুল্লার লামাপাড়া খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম এর সামনে পৌছামাত্র বখাটে রাসেল প্রেম নিবেদন করা সহ বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি দেখিয়ে উত্যক্ত করে। এক পর্যায়ে বখাটে রাসেল তার মেয়ের গায়ে থাকা ওড়না টান দিয়া নিয়া নেয় এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে।
ফতুল্লা মডেল থানার (ওসি) নূরে আযম জানান, এঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বখাটে রাসেলকে গ্রেপ্তারের জন্য একাধিক স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আবু হানিফ জানান, মামলা দায়েরের পর থেকে বখাটে রাসেলকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত আছে। প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার সম্ভব হবে বলে আশা করছি।
এদিকে বখাটে রাসেলের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাধারন মানুষকে উল্লাস করতে দেখা গেছে এমনকি একের পর এক অপকর্মের বিষয়ে সাধারন মানুষ মুখ খুলতে শুরু করেছে। অনিবন্ধিত আন্ডারগ্রাউন্ড একটি নিউজ পোর্টালের সাংবাদিক পরিচয়ে তক্কারমাঠ শিয়ারচর এলাকাসহ আশেপাশের এলাকায় বখাটে রাসেলসহ তার সহযোগীরা দাবড়িয়ে বেড়িয়েছে। সাংবাদিক পরিচয়ে স্থানীয় সাধারন মানুষকে বিভিন্নভাবে হয়রানীসহ ব্ল্যাকমেইলিংয়ের একাধিক অভিযোগ রয়েছে বখাটে রাসেলের বিরুদ্ধে। এমনকি বখাটে রাসেলের আওতাধীন একটি অফিস খোলে নীরিহ মানুষদের বিভিন্ন সমস্যায় ফেলে পুলিশের ভয় দেখিয়ে অর্থ আত্মসাত করারও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, গত কয়েক বছর পূর্বে ফতুল্লার তক্কারমাঠ শিয়ারচর এলাকায় নারী নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ করার অভিযোগে হাতে নাতে আটক করে বখাটে ইমতিয়াজ আহাম্মেদ রাসেলকে। এসময় এলাকাবাসী বখাটে রাসেলকে গনধোলাই প্রদান করেন। এছাড়া সাংবাদিক পরিচয়ে এলাকাবাসীকে নানা ভাবে হয়রানী করে আসছে বলেও অভিযোগ উঠে আসছে। বখাটে রাসেলের সর্ব্বোচ্য শাস্তি দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানা যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ফতুল্লা রিপোর্টাস ইউনিটির সহ-সম্পাদক সফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমি এখনো অবগত নই। যদি রাসেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়ে থাকে তবে তদন্ত পূর্বক সাংগঠনিক ব্যবস্থা সংগঠন থেকে নেয়া হবে।