মা কাজল আক্তারকে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে চুরি করা হয় দুই মাসের শিশু আলিফকে। পরে দালালের মাধ্যমে এক লাখ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেন শিশুটি বাবা আলিরাজ সরদার ও দাদি পারুল বেগম। মায়ের অভিযোগের পর ঘটনার ছয়দিনের মাথায় শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শিশুটিকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তিনি আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন। শিশুটি উদ্ধার হলেও অভিযুক্তরা পলাতক আছেন।
জানা যায়, বুধবার রাতের খাবারের সঙ্গে স্বামীর দেওয়া চেতনানাশক ওষুধ খেয়ে কাজল আক্তার তার ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে আলিফকে পাশে দেখতে পান না মা। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও ছেলের সন্ধান পাননি। তার স্বামী আলিরাজ সরদারকে দেখতে না পেয়ে বিভিন্ন আত্মীয়ের বাড়িতেও খোঁজ করেন। পরে তিনি জানতে পারেন এক লাখ টাকার বিনিময়ে মাদারীপুর সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের দুধখালী গ্রামের জামাল হাওলাদারের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয় আলিফকে।
বিষয়টি পুলিশকে জানালে মঙ্গলবার বিকেলে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয় শিশুটিকে।
মাদারীপুরের কালকিনির চরঠ্যাঙ্গামারা গ্রামের আলিরাজ সরদার শহরে রিক্সা চালান। আলিরাজ সরদার তার ছেলে আলিফকে বিক্রির সময় সহযোগিতা করেন শিশুটির দাদি পারুল বেগম ও শহরের পুরানবাজার এলাকার দালাল নাসিমা বেগম। পরে সবাই ভাগাভাগি করে শিশু বিক্রি করার টাকা নেন।
আলিফের মা কাজল আক্তার বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার পাশে আলিফ নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে জানতে পারি আলিফকে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। আমার স্বামী ও শাশুড়ি মিলে এমন কাজ করতে পারবে, কোনো ভাবিনি। বাবা কীভাবে টাকার জন্য নিজ হাতে নিজের সন্তানকে বিক্রি করে দেয়। আমি এ ঘটনায় অপরাধীদের বিচার চাই।
কালকিনি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফয়সাল হাসান বলেন, শিশুটিকে উদ্ধারে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্তরা পালিয়ে যান।
কালকিনি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মারগুব তৌহিদ বলেন, এক লাখ টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। মায়ের দেওয়া মৌখিক অভিযোগে শিশু আলিফকে। মা কাজল আক্তার যদি আইনগত কোনো সহযোগিতা চান, তাহলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।