লাখো পর্যটকের ভিড়ে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত জনসমুদ্রে রূপান্তর
মাহবুব আলমঃ সপ্তাহব্যাপী চলা পর্যটন মেলা ও সরকারি ছুটিতে লাখো পর্যটক ভিড় করছেন কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। শুধু সমুদ্রসৈকত নয়, পর্যটকরা ছড়িয়ে পড়েছেন জেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও। এসব পর্যটকদের বিভিন্ন সেবার পাশাপাশি নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় কাজ করছে বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বিচ কার্নিভ্যালের নানা অনুষ্ঠান থাকায় পর্যটকের ভিড় আরও বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা পর্যন্ত কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট পর্যটকে ঠাসা কোথাও কোন হোটেল, মোটেল ,রিসোর্ট,গেষ্টহাউস টইটম্বুর আর পর্যটকের পদচারণায় । শুধু সৈকত নয়, পর্যটকরা দিনব্যাপী ঘুরে বেড়িয়েছেন প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, ইনানীর পাথর রাণী সৈকত, হিমছড়ি ঝর্ণা, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, শহরের বার্মিজ মার্কেট , ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক ও রামুর বৌদ্ধ বিহারসহ কক্সবাজারের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে । পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তিন দিনের ছুটিতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ঘুরতে এসেছেন লাখো পর্যটক। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সপ্তাহব্যাপী পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভাল। ফলে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটেছে এই কক্সবাজার জেলায় উৎসবে মেতেছে পুরো কক্সবাজার।
তবে পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভাল উপলক্ষে সর্বোচ্চ ৬০% পর্যন্ত ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হলেও, তা অধিকাংশ হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট ছাড় দেয়নি বলে অভিযোগ জানিয়েছেন একাধিক পর্যটক। তবে সার্বিক নিরাপত্তা এবং ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। রাজধানীর ব্যস্ততম শহর ঢাকার থেকে আগত পর্যটক রনি ও বন্ধুরা ছাড়ের কথা শুনে ঘুরতে এসে দেখে আসলে ছাড় যেসব হোটেল এ ঘোষণা হয়েছে বলে বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে তা একটা পর্যটকের সঙ্গে নাটকীয় প্যাকেজ, কুমিল্লা থেকে আসা সোহেল, আরমান হোসেন ও রিমনের অভিযোগ, “১৫টি খাতে সর্বোচ্চ ৬০% পর্যন্ত ছাড়ের ঘোষণা শুনে বুধবার কক্সবাজারে ঘুরতে এসেছি। কিন্তু ওই দিন একাধিক হোটেল-মোটেলে গিয়ে কোনো ছাড় পাইনি বলে জানান উল্টো কক্ষ খালি নেই বলে বেশি দাম নিয়েছেন হোটেল মালিকপক্ষ এক হাজার টাকার হোটেল ২৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা নিচ্ছে
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলাতলী হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মৌখিন খান বলেন, “দুই-একটি হোটেল-মোটেলের মালিকরা এমনটি করতে পারে। বিষয়টি অস্বীকার করছিনা তবে গত দুই দিন ছাড় দেওয়া হয়েছে, এটা সত্য। এরই মধ্যে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটেছে কক্সবাজার জেলায় । হোটেলগুলোর সব কক্ষ বুকিং থাকায় হয়তো কেউ কেউ এ সুযোগে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন। তবে আমরা কোনো অভিযোগ এখনও পাইনি।”
পর্যটকদের নিরাপত্তায় পুরো সমুদ্রসৈকত ও আশপাশের এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে বলে জানালেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, “মেলায় নিরাপত্তায় কোন ধরনের ঘাটতি নেই। বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে সৈকতে কয়েক লাখ পর্যটকের সমাগম আশা করা হচ্ছে।
পর্যটন দিবস উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী চলমান পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভাল ঘিরে পর্যটকদের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। অত্যন্ত আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে তারা । কোনো পর্যটন স্পটে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পেলে তৎক্ষণাৎ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমনটাই জানিয়েছেন ।” কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, “পর্যটকদের হয়রানি রোধে মাঠে কাজ করছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। যেখানেই অনিয়ম হবে, সেখানে তৎক্ষণাৎ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, অন্যান্য বছরের তুলনায় আরও পর্যটকের আগমন ঘটুক কক্সবাজার জেলায় । পর্যটন শিল্পের বিকাশ হোক সমগ্র বিশ্ব ব্যাপী ।”