শনিবার ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রাত ২:০৮
শিরোনামঃ
Logo থার্টি-ফার্স্ট নাইট আতশবাজি অপ্রতিকার ঘটনা এড়াতে অভিযান -বিপুল পরিমাণ আতশবাজি জব্দ করে মহানগর (ডিবি) Logo চাঁদপুরে জুমার সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান দেওয়ায় এক ইমামকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়। Logo জানুয়ারীতে ৫০ টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। Logo চাঁদপুর মেঘনা নদীতে জাহাজে হত্যাকাণ্ডের শিকার সজীবুল ইসলাম-মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে মারা গেলেন বাবা,, Logo কলকাতা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত হল, দীনেশচন্দ্র সেন আলোচনা সভা ও গবেষণা পুস্তক সম্মাননা ২০২৪। Logo লক্ষ্মীপুরে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা Logo নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লায় গার্মেন্টস ঝুট দখলে নিতে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ আহত ৭ Logo বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলায় চিকিৎসক জেল হাজতে Logo সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে-৭ সদস্যের কমিটি গঠন (এলজিআরডি) Logo মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও তালিকায় নাম উঠেছে-ভুল’ স্বীকার করে মুক্তিযোদ্ধার নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেন ২ জন

এক ক্লাসে এক শিক্ষার্থী, প্রধান শিক্ষক-কমিটি দ্বন্দ্বে শিক্ষার্থী শূন্য বিদ্যালয়

nagarsangbad24
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি, ২৪, ২০২৪, ৮:৩০ অপরাহ্ণ
  • ১১৫ ০৯ বার দেখা হয়েছে

       
 
  

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার কাদরা ইউনিয়নের নন্দীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের

এক ক্লাসে এক শিক্ষার্থী, প্রধান শিক্ষক-কমিটি দ্বন্দ্বে শিক্ষার্থী শূন্য বিদ্যালয়

মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, নোয়াখালী প্রতিনিধি :

এক ছাত্র নিয়ে একটি শ্রেণি কক্ষে চলছে পাঠদান, বিদ্যালয়ের বাকি কক্ষগুলো পড়ে আছে ফাঁকা। এমন চিত্র নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার কাদরা ইউনিয়নের নন্দীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। গত কয়েক বছর ধরে প্রতি শিক্ষাবর্ষে ৫/১০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে এভাবে চলে আসছে বিদ্যালয়টির পাঠদান কার্যক্রম। স্থানীয়রা বলছে বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অশোভন আচরণ ও অব্যবস্থাপনার কারণে এমন পরিস্থিতি। তবে প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ কমিটি ও চেয়ারম্যানের অসহযোগিতার কারণে লোকজন তাদের বাচ্চাদের এ বিদ্যালয়ে দিচ্ছে না।

সরেজমিনে ২২ জানুয়ারি সোমববার বিদ্যালয়টি ঘুরে দেখা গেছে, বেলা ১১টা নিয়মানুসারে প্রাথমিকের পাঠদান চলার কথা। কিন্তু সেই সময় প্রধান শিক্ষক’সহ ৩জন শিক্ষক অফিস কক্ষে বসে আছেন। একজন প্রাক-প্রাথমিকের পাঠ পরিকল্পনা প্রস্তুত করছেন। আর সহকারি শিক্ষক জহিরুল আলম সকালে এসে স্বাক্ষর দিয়ে বের হয়ে গেছেন। ওইসময় বিদ্যালয়েল প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সকল শ্রেণি কক্ষ শিক্ষার্থী শূন্য। সাংবাদিক দেখে অফিস কক্ষ থেকে দুইজন সহকারি শিক্ষক তড়িঘড়ি করে বের হয়ে আসেন। মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীকে প্রথম শ্রেণির কক্ষে ডুকিয়ে বেঞ্চে এনে বসান। তখনও বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক থেকে অপর কক্ষগুলো শিক্ষার্থী শূন্য। সোজা কথায় বিদ্যালয়ে ৪জন শিক্ষকের বিপরীতে শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন মাত্র ১জন। কিছুক্ষণ পর একজন শিক্ষক প্রথমে মোস্তাফিজকে গণিত, পরে আরেকজন ইংরেজি পড়ান। দুপুর ১২টার দিকে চতুর্থ শ্রেণিতে ২জন ও তৃতীয় শ্রেণির আরও ১ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসে। রোববারে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট উপস্থিত ছিলো ৪জন শিক্ষার্থী। এছাড়া বিদ্যালয় চলাকালীন সময় বেশ কিছু বখাটে বিদ্যালয়ের বারান্দায় এবং শ্রেণি কক্ষে ডুকে আড্ডা দিতেও দেখা গেছে। আবার প্রধান শিক্ষক তাদের দিয়ে বিভিন্ন কাজও করান।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ২০০৬ সালে অবসরে যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বপান সহকারি শিক্ষক রাশেদা আক্তার। কিন্তু এরপর থেকে তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত কোন ক্লাস নিতেন না, গত ৪/৫ বছর ধরে তা একবারেই বন্ধ হয়ে যায়। তার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বিদ্যালয়টিতে কমতে থাকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব অবহেলার কারণে সহকারি শিক্ষক যারা আছেন তারাও নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না। যার ফলে এখানে বাচ্চাদের দিলে তাদের লেখাপড়ার কোনো উন্নতি হয়না, তাই বাধ্য হয়ে তাদের অনত্রে নিয়ে যেতে হয়। নতুন বছর আসলে প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে নতুন শিক্ষার্থী সংগ্রহে বাড়ি বাড়ি গেলেও এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কখনও কারো বাড়িতে যান না। সহকারি শিক্ষকরা যেতে বললেও তাদের নিষেধ করে দেন। গত দুই বছর ধরে এলাকার লোকজন ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির লোকজনের সাথে খারাপ আচারণ’সহ বিভিন্ন কারণে প্রধান শিক্ষকের সাথে কারও সম্পর্ক ভালো না। সকল অনিয়মের অবসানের মাধ্যমে ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পদচারণায় ও সুন্দর এবং স্বাভাবিক পাঠদানের মধ্য দিয়ে আবারও মুখোরিত হয়ে উঠবে এমন প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলে হাসান একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করতো। স্কুলের পাশে তার দোকান হওয়ায় গত এক বছর আগে তাকে এ বিদ্যালয়ে এনে ভর্তি করেন। কিন্তু গত এক বছরে সে এখনও পর্যন্ত বই দেখে রিডিং পড়তে পারেন না। যার ফলে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক জহিরুল আলমকে আমি হাসানকে প্রাইভেট পড়াতে বলি। এ বিষয়টি নিয়ে তিনি অসম্মান বোধ করেছেন বলে আমার ছেলে হাসানকে ক্লাসে মারধর করে। এজন্য এখানে কেউ তাদের বাচ্চাদের ভর্তি করে না। কাগজে কলমে তারা এখানে ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী দেখালেও বিদ্যালয়ে ৪-৫জনের বেশি শিক্ষার্থী কখনও হয় না। তাছাড়া প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব অবহেলার এবং তদারকি না থাকায় এ শিক্ষক নিয়মিত বিদ্যালয়েও আসেন না। আসলেও অনেক সময় স্বাক্ষর দিয়ে চলে যান।

বিদ্যালয়টির তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এ বিদ্যালয়ে নতুন করে ৪জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। যারমধ্যে প্রাক-প্রাথমিকে একজন, প্রথম শ্রেণিতে দুই ও তৃতীয় শ্রেণিতে একজন। বর্তমানে বিদ্যালয়ে কাগজে-কলমে মোট শিক্ষার্থী ১৭জন। কিন্তু উপস্থিতি হয় প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে ৫জন। শিক্ষার্থী কম থাকায় অবসর সময় কাটাতে হয় শিক্ষকদের।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) রাশেদা আক্তারের অভিযোগ করে বলেন, পরিচালনা কমিটির সভাপতি কোনো মিটিং এ আসেন না। তাকে বিভিন্ন তহবিল থেকে কমিশন দিতে বলেন। সেটা না দেওয়ার কারনে তিনি কমিটির অন্য সদস্যদের এবং এলাকাবাসিকে স্কুলে ছেলে-মেয়ে দিতে নিষেধ করে দিয়েছেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও কমিটির সভাপতির কারনে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কম।

কমিটির সভাপতি মানিক মিয়া জানান, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে কাজ না করে বিভিন্ন ভূয়া ভাউচারে স্বাক্ষর করার জন্য আমাকে চাপ প্রয়ো করে। সেখানে স্বাক্ষর না করায় এবং তার কথা মতো ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন না করায় সে আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছে। সরকারি টাকা লুটপাটে বাধা দেওয়া সে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

স্থানীয় কাদরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলার জেরে কমিটি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বন্দ্বের কারণে আজ বিদ্যালয়টি প্রায় শিক্ষার্থী শূন্য হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় লোকজন আমাকে জানিয়েছে ওই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে এখান থেকে অপসারণ না করলে তারা তাদের বাচ্চাদের বিদ্যালয়ে ভর্তি করবেন না।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনছুর আলী চৌধুরী বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম, শিক্ষার্থী সংকট, বিদ্যালয়ের বহিরাগতদের আড্ডা’সহ অনেকগুলো অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একজন ব্যক্তির জন্য একটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা যাবে না।

এ বিভাগের আরও খবর...

পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  

Archive Calendar

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | নগর সংবাদ
Design & Developed BY:
ThemesCell