শনিবার (১১ মে) তাদের আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এর আগে শুক্রবার (১০ মে) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তাদের জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার চৌধুরী বাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার (৮ মে) রাতে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ জামালপুল জেলার মেলাহন্দ থানা পুলিশের সহায়তায় কাউটা বাইদ এলাকার ধানক্ষেতের পাশ থেকে উদ্ধার করে অপহৃত শিশু আব্দুর রহমানকে।
ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেন জানান, শিশুটির সৎ দাদি গ্রেপ্তারকৃত মমতাজ বেগম মঙ্গলবার (৭ মে) সকালে আব্দুর রহমানকে অপহরণ করে তার বাবা মায়ের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় তাকে ভারতে নিয়ে যাবে বলে হুমকি দেয়। অভিযোগ পেয়ে তারা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জামালপুর মেলাহন্দ থানা পুলিশের সহায়তায় বুধবার রাতে শিশুটিকে একটি ধান ক্ষেতের পাশ থেকে উদ্ধার করে। তবে সে সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় অপহরণকারীরা। পরবর্তীতে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ নিশ্চিত হয়ে শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার চৌধুরী বাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মমতাজ বেগম ও তার আগের স্বামী ফজলুকে গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মমতাজ বেগম পুলিশের কাছে স্বীকার করে যে, শিশুটিকে অপহরণ করে প্রথমে রিকশাযোগে ঢাকার ধলপুর এলাকায় যায়। সেখানে গিয়ে তার আগের স্বামী ফজলুকে সঙ্গে নিয়ে জামালপুরের মেলাহন্দে চলে যায়। এরই মধ্যে অপহৃত শিশুটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না পেলে শিশুটিকে ভারতে নিয়ে যাবে বলে জানায়। শিশুটির বাবা-মা দুই লাখ টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করলে তারা মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেয়। পরে তারা পুলিশের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যেতে চাইলে গ্রেপ্তার ফজলুর বোন শিশুটিকে রেখে পালিয়ে যাওয়ার কথা বললে তারা শিশুটিকে রেখে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার মমতাজ বেগম ভারতের বসিন্দা। তিনি একাধিক বিয়ে করেছেন। তার আগের স্বামীকে নিয়েই তিনি এ অপহরণের পরিকল্পনা করেন।
অপহৃত শিশুটির বাবা ও মামলার বাদী রবিন জানান, তার বাবা ছয় মাস আগে মমতাজ বেগমকে বিয়ে করে। তার সৎ মা শিশু সন্তানটিকে আদর করতেন। সে শহরের কালিবাজরে একটি মাংসের দোকানে এবং তার স্ত্রী একটি গার্মেন্টেসে কাজ করে চাঁদমারিতে আয়েশা বেগমের বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করতো এবং তার সৎ মা একই এলাকার দুলু মিয়ার বাসায় ভাড়ায় বসবাস করে আসছিল। তারা স্বামী স্ত্রী উভয়েই সকালে নিজ নিজ কর্মস্থলে চলে গেলে শিশুটিকে বাদীর সৎ মায়ের কাছে রেখে যায়।
৪-৫ দিন আগে তার বাবার সঙ্গে সৎ মায়ের ঝগড়া ও মনমালিন্য হয়। ধারণা করা হয়, তার বাবার ওপর অভিমান করে সৎ মা শিশুটিকে অপহরনণ করে নিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার (৭ মে) সকালে তারা স্বামী-স্ত্রী উভয়েই নিজ নিজ কমস্থলে চলে গেলে শিশুটিকে প্রতিদিনের ন্যায় তার সৎ মায়ের কাছে রেখে যাওয়ার পর দুপুর ১২টার দিকে রবিনের বাবা তার স্ত্রী আঁখিকে জানায়, শিশুসহ তার বাদীর সৎ মা সকাল ৯টার সময় বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। তখন বাদী তার সৎ মায়ের নাম্বারে ফোন করলে সে তা রিসিভ করছিল না। এক পর্যায়ে বাদীর সৎ মা বাদীকে ফোন করে ১০ লাখ টাকা দাবি করে অন্যথায় শিশুটিকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাচার করে দেবে বলে জানিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে তার সৎ মা মমতাজ বেগম (৫৬) সহ অজ্ঞাত নামা আরও ২-৩ জনকে আসামি করে বুধবার (৭ মে) দুপুরে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন।