ঢাকা প্রতিনিধি।।
এতে আরও বলা হয়, তাছাড়া ২০১৩-২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত পত্রিকার সব অফিস কপি, গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র, সংবাদের প্রমাণপত্রসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। তারা অফিসে তালা লাগিয়ে সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বের দেয়। এতে আনুমানিক ৭-৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা উত্তরা-পশ্চিম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। সেনাবাহিনীর ক্যাম্পেও জানিয়েছি। তারপরও সন্ত্রাসীরা এমন ভয়ঙকর যে আমরা অফিসে যেতে পারছি না।
এদিকে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উত্তরায় চাঁদাবাজির হাতবদল হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। বিএনপি নেতা এস এম জাহাঙ্গীরের ছত্র-ছায়ায় থাকা যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা এসব অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন বলেও একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বাহিনী গড়ে তারা ২৯টি খাতের প্রায় ১৫ কোটি টাকার চাঁদা তোলার বাণিজ্য শুরু করেছন। এতে ওপর থেকে নির্দেশনা দিচ্ছেন বিএনপি ও যুবদলের কয়েকজন নেতা। মাঠপর্যায়ে অপকর্ম চালাচ্ছেন কিশোর গ্যাংয়ের প্রায় ১৯টি দলের সদস্যরা। এতে এলাকার মানুষের মধ্যে ভীতি ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
উত্তরার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এতদিন আওয়ামী লীগের নেতাদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ ছিল মানুষ। এখন তা হাতবদল হয়ে বিএনপি-যুবদলের দখলে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা আগের চেয়েও বেড়েছে। প্রত্যেকটি নির্মাণাধীন ভবন থেকেও নামে-বেনামে নিয়মিত চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। পরিবহন সেক্টর, তুরাগ নদীর পাড়, বার, দোকানপাট দখলে নিয়ে চাঁদা দাবি করছেন তারা। ফলে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পরও সুফল পাচ্ছে না উত্তরার মানুষ।
উত্তরার একজন প্রবীণ বিএনপি নেতা বলেন, ২০২০ সালের উপ-নির্বাচনের উত্তরার এ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন এস এম জাহাঙ্গীর। স্বৈরাচার পতনের পর তিনি হয়ে গেছেন অঘোষিত এমপি। মাসখানেক আগেও ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের হয়ে যারা মাঠে নেমেছিল, তারা এখন জাহাঙ্গীরের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে অপকর্মে জড়িয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।
সংবাদপত্র অফিসে হামলা-লুট এবং উত্তরায় চাঁদাবাজির ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার রওনক জাহান বলেন, রাস্তা আটকে কোনো দোকানপাট বসলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। তাছাড়া পরিবহনের চাঁদাবাজির বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির বর্তমান নেতা ও সাবেক যুবদল নেতা এস এম জাহাঙ্গীরবলেন, ‘সংবাদপত্র অফিসটি এক সময় বিএনপির অফিস ছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তা দখল করে আওয়ামী লীগের অফিস করা হয়। গত পরশু সেখানে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তাতে আমাকে জড়ানো হয়েছে বলেও জেনেছি। পরে যুবদল নেতা মিলন ও পত্রিকার লোকদের ডেকে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে।’
চাঁদাবাজির অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৫ তারিখ পর্যন্ত আমি জেলে ছিলাম। ৬ আগস্ট ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেছি। চাঁদাবাজি বা পরিবহন দখলের মতো কাজে আমি জড়াবো, এটার প্রশ্নই ওঠে না। আমি ছাত্র রাজনীতি, যুব রাজনীতি করে তৃণমূল থেকে উঠে এসেছি। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এখন অনেকে অনেক অভিযোগ তুলছেন। এসব মিথ্যা-ভিত্তিহীন।’