নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রস্তুতি সভায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং পূজা উদযাপন কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বর্তমান পরিস্থিতি’তে কিভাবে একাধিক বাহিনীর যৌথ চেষ্টায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। এছাড়াও পূজার পূর্বে কি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি, দুর্ঘটনা ও সহিংসতা এড়াতে কি কি করণীয় এসকল বিষয়ে সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দের মধ্যে আলোচনা হয়। এসময় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও পূজা উদযাপন কমিটি, আনসার, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ কর্মকর্তা, প্রশাসেনর কর্মকর্তারা বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করেন। সভায় উপস্থিত জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক বলেন, দূর্গা পূজা যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষে পূর্ণ প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে । তিনি জানান, দূর্গা পূজা উপলক্ষে প্রতিবারই আমরা পূজার প্রস্তুতি, নিরাপত্তা এবং সার্বিকভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে এবার আগের চাইতে একটু বেশি ধাপ অবলম্বন করা হচ্ছে। ৯ থেকে ১০টা মন্ডপ এর জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশের টিম থাকবে। সেই সাথে র্যাবের টিম থাকবে, সেনাবাহিনীও এক্টিভ থাকবে। আমরা সেনাবাহিনীর সাথে আলাদাভাবে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিব। কোন সেক্টরে কোন ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে এবং পুলিশের কোন টিম থাকবে। র্যাবের টিম কোন অঞ্চলে টহলে থাকবে, বিজিবি কোন অংশ কাজ করবে সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমরা আলোচনার মাধ্যমে অঞ্চলগুলোতে টহল টিম বন্টন করবো। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সকল ব্যবস্থা নেব। সভায় পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, পূজা উদযাপন সংগঠনের যারা সদস্য রয়েছে তাদের বলবো, গ্রামে-গঞ্জে পূজা উদযাপনের জন্য ফান্ড গঠন করুন। সেখানে জেনারেটর থাকে না, সিসি টিভি ক্যামেরা থাকে না। পূজা উদযাপনে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আপনাদের উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পূজার সময় ডিজে সিস্টেমের আয়োজন করা হয়। আমি মনে করি, এটা বাজুক কিন্তু নিয়ন্ত্রিত আকারে। অনেকেই হার্টের রোগে ভুগছেন, বাচ্চাদের উচ্চ আওয়াজে সমস্যা হয়। সন্ধ্যা থেকে দু থেকে এক ঘন্টার জন্য ছেলেরা একটু নাচ গান করবে। এরপর অল্প আওয়াজে গান বাজনা হউক। তবে রাত ১২টার পর যেন কোন বাজনা না বাজে। রাত ১২টার পর গান বাজালে, পাশের মানুষরা ইট পাটকেল ছোড়া শুরু করে। এ বিষয়টা মাথায় রাখবেন। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান পূজা উপলক্ষে মিটিং করে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হিন্দু সম্প্রদায় যেন আমাদের ওপর আস্থা রাখতে পারে সে অনুযায়ী আমাদের কাজ করতে হবে। আপনারা আপনাদের যেকোন অসুবিধায় আমাদের জানাবেন। প্রশাসন খুব আন্তরিক। আমরা নারায়ণগঞ্জকে সুন্দর রাখতে চাই। নারায়ণগঞ্জ মহানগর ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমরা পূজায় আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। যদি কোথাও নিরাপত্তার প্রয়োজন হয় বা কোন স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন হয়। ডিসি সাহেবের মাধ্যমে আমাদের জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব। পূজায় আমরা পুরো শহরে মন্ডপগুলো পরিদর্শন করবো। নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার শিপন বলেন, নয় তারিখ থেকে আমাদের এই শারদীয় উৎসব শুরু হবে। দশ তারিখে আমাদের অষ্টমী।
এদিন হাজার হাজার ভক্তদের সমাগম ঘটে এখানে। টানবাজার, আমলাপাড়ায়ও প্রচুর ভক্তের সমাগম ঘটে। আমরা চাই এই এলাকাগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হোক। দেওভোগ আখড়া, পালপাড়া, নন্দীপাড়া এলাকাগুলো ঘনবসতিপূর্ণ। এখানে পূজার সময় ছিনতাইয়ের ঘটনা বৃদ্ধি পায়। তাই আমরা এখানে নিরাপত্তার জন্য আবেদন করছি।