কখনো স্বপ্নচারিণীর কবিতা কিংবা পাগলা হাওয়ায় বন্ধু আসার বার্তা দেন গানের সুরে। আবার এই গানের সুরেই আকাশের কাছে জানতে চান মায়ের কথা।বুক ফাটা প্রেমিকের আর্তনাদে হয়ে ওঠেন এক নদী যমুনা। তিনি বরাবরই তারুণ্যের জোয়ারে উম্মাতাল।
বলছি দেশের অন্যতম রকস্টার নগর বাউল জেমসের কথা। যার গানের উম্মাতালে সদা ভদ্র ছেলেটিও খানিক সময়ের জন্য পরিণত হন দুষ্টু ছেলের দলে। এই রকস্টার ৫৭ বছর পূর্ণ করে ৫৮ বছরে পা রাখতে যাচ্ছেন শনিবার (২ অক্টোবর)। দিনটি আয়োজনহীন চলে যাবে এমন হতেই পারে না দুষ্টু ছেলের দল থাকতে।
প্রতি বছরের ন্যায় চলতি বছরও নানা আয়োজনের মাধ্যমে জেমসের জন্মদিন পালন করবেন তার ভক্তরা। জন্মদিনে দেশব্যাপী নানা কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়েছে তারা।
জেমস-এর মুখপাত্র রুবাইয়াৎ ঠাকুর রবিন জানান, প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন জেলার ভক্তরা জেমস ভাইয়ের জন্মদিনটি উদযাপন করে থাকেন। এবারও এরকম বেশকিছু উদ্যোগের কথা জেনেছি।
বিভিন্ন জেলার ‘দুষ্টু ছেলের দল’ নামে জেমসের ভক্তরা সারা দিনব্যাপী বিভিন্ন আয়োজন রেখেছে। এর মধ্যে ঢাকা, খুলনা, যশোর, নরসিংদী, রংপুর, মেহেরপুর, কুড়িগ্রাম, ভোলা পটুয়াখালী, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় জেমসের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনায় মসজিদ-মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন মিলনমেলায় দোয়ার আয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি কেক কেটে সুবিধাবঞ্চিতদের সঙ্গে নিয়ে গান ও আড্ডার আয়োজন রেখেছে তারা।
কিশোরগঞ্জসহ বেশকিছু জায়গায় সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করারও উদ্যোগ নিয়েছে জেমস ভক্তদের গ্রুপ ‘দুষ্টু ছেলের দল’।
সঙ্গীতের নন্দিত তারকা জেমস ১৯৬৪ সালের নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিং-এ। বন্ধুদের নিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ব্যান্ড ‘ফিলিংস’। ১৯৮৭ সালে ফিলিংস ব্যান্ডের সঙ্গে তার প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’ প্রকাশ হয়।
১৯৮৮ সালে আসে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘অনন্যা’। পরবর্তীতে ‘ফিলিংস’-এর নাম পরিবর্তন করে দেন ‘নগর বাউল’। জেমস-এর ব্যান্ড ও একক অ্যালবামের মধ্যে আরো রয়েছে- লেইস ফিতা লেইস, নগর বাউল, দুষ্টু ছেলের দল, পালাবে কোথায়, দুঃখিনী দুঃখ করো না, আমি তোমাদেরই লোক ও কাল যমুনা।
বাংলাদেশি সিনেমায় জেমসের গান বেশ জনপ্রিয়। বলিউডের বেশ কয়েকটি সিনেমায় গান করেছেন জেমস। যা তাকে উপমহাদেশে আরও জনপ্রিয় করে তোলে। একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অনেক স্বীকৃতি পেয়েছেন এই তারকা।
জেমসের গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘তারায় তারায়’, ‘লেইস ফিতা লেইস’, ‘সুলতানা বিবিয়ানা’, ‘সুস্মিতার সবুজ ওড়না’, ‘হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা’, ‘কবিতা তুমি স্বপ্নচারিণী’, ‘দুস্টু ছেলের দল’, ‘দিদিমনি’, ‘দুঃখিনী দুঃখ করোনা’, ‘তোর সব কিছুতে নয় ছয়’, ‘বাবা কত দিন দেখি না তোমায়’, ‘গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া’, ‘লিখতে পারি না কোনো গান’, ‘এক নদী যমুনা’ ইত্যাদি।