নগর সংবাদ।।আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘করের টাকা ব্যয়ের ব্যাপারে আমাদের আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। জনগণের করের টাকার যেন কোনো অপচয় বা অপব্যবহার না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।’
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) জাতীয় আয়কর দিবস-২০২১ উপলক্ষে ‘রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়ন ও আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে আয়করের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
কর প্রদানের মাধ্যমে রাজস্ব বাড়িয়ে দেশের উন্নয়নে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা আয়কর দিয়ে গরিব-দুঃখী ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান। আপনাদের করের টাকাই দেশের উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি, যা স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, যোগাযোগ ও পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় করা হয়। আপনারা যতো বেশি আয়কর দেবেন, বাংলাদেশ ততো বেশি এগিয়ে যাবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশে রাজস্ব সংগ্রহের প্রবৃদ্ধি কমার অন্যতম কারণ ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার করোনাকালে কর সংগ্রহের ব্যাপারে বেশ কিছু ছাড় দিয়েছিলেন। এসময় তিনি দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখার জন্য যেমন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন, তেমনি জনগণের জীবন-জীবিকা ও আয়-রোজগারের বিষয়টিও বিবেচনায় রেখেছেন। উৎপাদনমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো সচল রাখার বিষয়টিও তিনি মাথায় রেখেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঠিক দিকনির্দেশনা এবং আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা করোনার চ্যালেঞ্জ অনেকটাই মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো খুব দ্রুত আগের অবস্থানে ফিরতে শুরু করেছে। উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে রাজস্ব সংগ্রহের প্রবৃদ্ধির ওপর। ফলে ২০২০-২১ অর্থবছরে আয়কর সংগ্রহের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ।’
সেমিনারে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের মাধ্যমে লক্ষ্যপূরণে এগিয়ে যেতে হবে। কোনো কিছু চাপিয়ে দিলে হবে না।’
তিনি বলেন, ‘সামনে যাকে পাই, তার কাছ থেকে বেশি কর নিতে হবে এ ধারণা থেকে সরে আসতে হবে। উপজেলা পর্যায়ে ভ্যাট, ট্যাক্স দেওয়ার মত অনেক লোক আছেন। তাদের কাছ থেকেও আদায় করতে হবে। তাহলে করদাতার ওপর চাপ কমবে।’
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। তাদের হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্যের চাহিদা বেশি। এতোদিন এ খাত আমদানিনির্ভর ছিল। আমরা চাই এসব পণ্য উৎপাদনে বিশেষ সুবিধা দিয়ে দেশীয় শিল্পকে এগিয়ে নিতে।
এ খাতে দেশ স্বনির্ভর হোক।’
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এনবিআর সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, মো. মাসুদ সাদিক ও সামস উদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।