নগর সংবাদ।। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তৃতীয়ভাবের মতো নগরমাতা নির্বাচিত হয়েছেন ডা. সেলিনা হায়াত আইভী। ২০১১ সালের ৩০ অক্টোরের নির্বাচনে তিনি আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী শামীম ওসমানকে পরাজিত করে প্রথমভারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৬ সালের ২২ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানকে পরাজিত করেন। এবার তিনি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার। তাকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে নির্বাচিত হচ্ছেন জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।
সবশেষ ফলাফল অনুয়ায়ী ১৯২টি কেন্দ্রের মধ্যে স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত ১৯২টি কেন্দ্রের ফলাফলে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা পেয়েছেন ১ লাখ ৬১ হাজার ২৭৩ ভোট। হাতি পেয়েছেন ৯২ হাজার ১৭১ ভোট,।
ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বাবা আলী আহাম্মদ চুনকা শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন, স্বাধীনতার পর দুই-দুবার (১৯৭৪ সালের ৪ মার্চ হতে ১৯৭৭ সালের ৯ মার্চ এবং ১৯৭৭ সালের ১০ সেপ্টেম্বর হতে ১৯৮৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৮৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী মারা যান নারায়ণগঞ্জ পৌর পিতার উপাধি আলী আহাম্মদ চুনকা। আলী আহাম্মদ চুনকার পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার বড় হলেন ডা. সেলিনা হায়াত আইভী।
আইভী ১৯৭৯ সালে ট্যালেন্টপুলে জুনিয়র স্কলারশিপ পান এবং ১৯৮২ সালে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় স্টারমার্কসহ উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি ১৯৮৫ সালে রাশিয়ান সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানে শিক্ষাগ্রহণের জন্য ওডেসা পিরাগোব মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন এবং ১৯৯২ সালে কৃতিত্বের সাথে ডক্টর অব মেডিসিন ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮৬ সালে আইভী বৃত্তি নিয়ে পড়তে যান তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের ওদেসা নগরের পিরাগভ মেডিকেল ইনস্টিটিউটে। পরবর্তীতে ১৯৯২-৯৩ সালে ঢাকা মিডফোর্ট হাসপাতালে ইন্টার্নি সম্পন্ন করেন। ডা. আইভী তাঁর সুদীর্ঘ শিক্ষা জীবনের পর ১৯৯৩-৯৪ সালে মিডফোর্ট হাসপাতালে এবং ১৯৯৪-৯৫ সালে নারায়ণগঞ্জ ২০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে অনারারি চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন।
১৯৯৩ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদিকা ছিলেন। ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাঁর সক্রিয় রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে। পৌরসভার নির্বাচনের মাত্র ১৭দিন আগে নিউজিল্যা-থেকে তাকে উড়িয়ে দেশে আনা হয়। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দিয়ে তার পক্ষে নারায়ণগঞ্জে জোর প্রচারণা চালান দলের কেন্দ্রীয় অনেক নেতা। তখন বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও বিপলু ভোটে জয়ী হন তিনি। ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারী দায়িত্ব গ্রহণ করে ২০১১ সালের ২৫ জুন পর্যন্ত একটানা পৌর চেয়ারম্যানের আসনে বসে উন্নয়নের চেষ্টা করেন তিনি। ২০১১ সালে ৫ মে নারায়ণগঞ্জের তিনটি পৌরসভা যথাক্রমে নারায়ণগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ ও কদমরসুল কে একীভুত করে স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) প্রতিষ্ঠা বিধিমালা ২০১০ এর বিধি ৬-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার প্রায় ৭২.৪৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করে সরকার।