নগর সংবাদ।।প্রায় নিভে যাওয়া আলো। আঁধার ঘিরেছিল জীবনঘরে। হাল ছেড়েছিলেন চিকিৎসকরাও। নিথর দেহে হাসপাতালের বেডে শুয়ে বলেছিলেন, ‘আমি কি বাঁচবো? আমাকে বাঁচান। আমি আবার গানের মঞ্চে ফিরতে চাই।’
ফিরে এসেছেন গানের পাখি শারমিন। ফের সুর তুলছেন গানে গানে। এখন শুধু মঞ্চে যাওয়ার পালা।
থাইরয়েডজনিত জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়েছিলেন বাউল শিল্পী শারমিন। রক্তের উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় শূন্যের কোটায় নামাসহ জটিল উপসর্গে দেড়মাস মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েন। প্রথমে হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয় শারমিনকে।
অসাধারণ কণ্ঠের অধিকারী তরুণ এই শিল্পীর অসুস্থতায় পরিবারে নেমে আসে ঘোর আঁধার। মেয়েকে বাঁচাতে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকেন বাবা-মা। সাহায্যে এগিয়ে আসেন শারমিনের গানের অনুরাগীরা। অনেকেই সহযোগিতা করতে থাকেন। সহযোগিতার হাত বাড়ায় বেসরকারি টিভি চ্যানেল আরটিভি। মানুষের ভালোবাসা আর চিকিৎসকদের ঐকান্তিক চেষ্টায় মৃত্যুর কোল থেকে ফিরে আসেন।
বর্তমানে বাড়িতে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকা শারমিন ধীরে ধীরে স্বাভাবিকতায় ফিরছে। গানের মঞ্চে না গেলেও রেওয়াজে মন দিতে শুরু করেছেন। সুরেই ভর করে ফের ডানা মিলছেন এই গানের পাখি।
বাসায় বসেই হারমোনিয়ামে গান করছিলেন। গানের ছলেই আলাপ। বলছিলেন, ‘হলি ফ্যামিলি থেকে যখন ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করে তখন আমি অনেকটাই অচেতন। শরীরের কোনো কিছুই স্বাভাবিক কাজ করছিল না। থাইরয়েডের সমস্যা হলেও আমাকে ব্লাড ক্যান্সার ইউনিটে ভর্তি করানো হলো। এতে আরও ঘাবড়ে গেলাম। থেরাপিও চললো। রক্তের উৎপাদন নেই বললেই চলে। মৃত্যুর একদম কাছাকাছি আমি। আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ভরসা পাইনি।’
ভক্তদের ভালোবাসার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘মানুষের ভালোবাসাই বেঁচে থাকার বড় শক্তি বলে এখন মনে হচ্ছে। ছোট্ট মানুষ আমি। কিন্তু হাজার হাজার মানুষের ভালোবাসা পেয়ে পরিপূর্ণ জীবনের স্বাদ পেয়েছি। অসংখ্য গুণী শিল্পী আমাকে দেখতে গিয়েছেন। সহযোগিতা করেছেন। সাংবাদিকরা খবর করেছেন। আরটিভিসহ অন্যান্য অন্যান্য পাশে ছিল। চিকিৎসকদের আন্তরিকতায় আমি মুগ্ধ। সর্বোপরি বাবা-মায়ের যত্ন আর ভালোবাসা আমাকে নতুন জীবন দিয়েছে।’
গানের ব্যাপারে আড়ং ডেইরি- চ্যানেল আই বাংলার গান-২০১৬ চ্যাম্পিয়ন শারমিন বলেন, ‘গান দিয়েই মানুষের মন জয়। গানেই ফিরছি আবার। চিকিৎসকদের পরামর্শে বিশ্রামে আছি। সামনে আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা আছে। আপাতত অল্প অল্প রেওয়াজ করার চেষ্টা করছি। পুরোনো গানগুলোই আবার সুর করার চেষ্টা করছি। শিগগির মঞ্চে ফিরতে পারবো বলে আশা করছি।’