আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলেও নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার সক্ষমতা রাখে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘১ ফেব্রুয়ারি ছয়টি আসনে উপ-নির্বাচন হয়েছে। এ নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেননি। এ উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলেও নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার সক্ষমতা রাখে।’
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে একাদশ জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে সংসদ নেতা এ কথা বলেন। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকেই বলেন যে, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। এখানে নাকি অনির্বাচিত সরকার আনতে হবে। আমার প্রশ্ন, এই যে ছয়টি উপ-নির্বাচন হলো, এই নির্বাচন সম্পর্কে কেউ তো একটি কথাও বলতে পারেননি। বাংলাদেশের একজন মানুষও কি এ নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুলতে পেরেছেন? তবে কিছু লোক আছে, তাদের সবসময় উল্টো কথা বলতেই হবে।’
তিনি বলেন, ‘এ নির্বাচন যে স্বচ্ছ হয়েছে, অবাধ নিরপেক্ষ হয়েছে, এটা কি প্রমাণ করে না যে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলেও নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন, নিরপেক্ষভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার সক্ষমতা রাখে? সেখানে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করেনি, করেও না, করবেও না।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্যই তো আমাদের আন্দোলন। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের জন্য আমরা সংগ্রাম করেছি। সেই সংগ্রামের সাফল্য বয়ে এনে আজকে ভাতের অধিকার যেমন আমরা নিশ্চিত করেছি, ভোটের অধিকারও আমরা নিশ্চিত করেছি। এটিই বাস্তব।’
যারা অনির্বাচিত সরকার আনতে চায়, তারা দেশের সংবিধানে বিশ্বাস করে কি না, প্রশ্ন তুলে সংসদ নেতা বলেন, ‘কিছু লোক বলে যাচ্ছে যে, দুই-তিন বছর অনির্বাচিত সরকার থাকলে ক্ষতিটা কী? এতে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে? এটি কোন ধরনের কথা। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার আসবো, যার জন্য আমাদের সংগ্রাম, আত্মত্যাগ, জেল-জুলুম অত্যাচার পর্যন্ত সহ্য করা। সেই গণতন্ত্র যখন ফিরিয়ে এনেছি, অব্যাহতভাবে গণতন্ত্র আছে বলেই আজ দেশের উন্নতিটা মানুষের কাছে দৃশ্যমান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অর্থনৈতিক নীতিমালা গ্রহণ ও যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলেই দেশের দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। এর ফলে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের মাঝে স্বস্তি ও শান্তি ফিরে এসেছে। আওয়ামী লীগ সরকার ধারাবাহিকভাবে তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে কমে আজকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে।’
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমন, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ এবং দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ডিজিটাল সুবিধা ব্যবহার করে করোনা মহামারি মোকাবিলা করেছি আমরা। করোনা মোকাবিলায় উপমহাদেশে বাংলাদেশ প্রথম ও বিশ্বে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দেওয়ায় ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।’