মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার ভয়ংকর মানবপাচারকারী চক্রের হোতা মিলন ফকিরসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১১।
রোববার (৫ মে) নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিন সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১ এর এএসপি ও মিডিয়া অফিসার সনদ বড়ুয়া।
গ্রেপ্তার মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা হলেন-মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার মো. রিজাউল ফকিরের ছেলে চক্রের হোতা মিলন ফকির (৪২), মৃত আলিম উদ্দিন ফকিরের ছেলে রিজাউল ফকির (৬৫) ও রিজাউল ফকিরের স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৫৫)।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানান, তারা তদন্ত সূত্রে জেনেছে চক্রের হোতা মিলন ফকির দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়া বসবাস করে মানবপাচারের কাজ করে আসছিলেন। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বেকার ও গরিব মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তার চক্রের অন্যান্য সদস্যদের মাধ্যমে বিদেশ পাঠিয়ে ভালো চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মানবপাচার করে আসছিলেন। তাদের এ ভয়ংকর কর্মের আরেকজন ভুক্তভোগী ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার গোয়ালদী গ্রামের সহিদুল শেখের ছেলে জুবায়েদ।
ভুক্তভোগীকে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে ইতালিতে মোটা টাকার বেতনের চাকরির প্রতিশ্রুতি দেন। তখন এ চক্রের ফাঁদে পড়ে জুবায়েরের বাবা-মা নিজের জমি বন্ধক রেখে এবং বিভিন্নভাবে টাকা জোগাড় করে রিজাউল ফকির ও তাসলিমা বেগমকে দেন। এরপর ২০২২ সালের আগস্ট মাসের ২৯ তারিখে তারা ভুক্তভোগীকে পাচার করে লিবিয়া পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকে জুবায়েরের কোনো সন্ধান না পেয়ে তার বাবা-মা মিলনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে এ প্রতারক ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করেন।
র্যাব আরও জানিয়েছে, এরপর হঠাৎ করে জুবায়ের একদিন পরিবারকে ফোন করে বলেন সেখানে তাকে প্রচুর অত্যাচার করা হচ্ছে এবং ট্রলারে করে সাগরে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে আতঙ্কিত হয়ে হোতা মিলনকে আরও ৬ লাখ টাকা দেন তারা। তবে টাকা দেওয়ার পরও ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে একপর্যায়ে এ আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
আসামিদের পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানায় র্যাব।