ছিনতাই ও অপহরণের চেষ্টাকালে পুলিশের হাতেই ধরা পড়লেন ডেমরা থানার এক উপপরিদর্শক (এসআই) সহ ৪ জন।
অভিযুক্ত এসআইয়ের নাম মোজাম্মেল হক (৩৭)।রাজশাহী জেলার বাগমারা থানার ময়েজ উদ্দিনের ছেলে তিনি।
তার বাকি ৪ সঙ্গী হলেন – রূপগঞ্জের ভুলতা এলাকার মাসুদ মিয়ার ছেলে আতিকুর রহমান ওরফে সোহেল (২৯), একই এলাকার মনজুর হোসেনের ছেলে হালিম মিয়া (২০) এবং বিজয় (২৬)।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) রাতে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের প্রভাকরদী বাজার এলাকায় ছিনতাইকালে আটক হন এসআই মোজাম্মেল।
শুক্রবার (১০ মার্চ) এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী (২৫) আড়াইহাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।
গ্রেফতার আসামি মোজাম্মেল হক ঢাকা ডেমরা থানার এসআই বলে নিশ্চিত করেছেন ডেমরা থানার ওসি শফিকুর রহমান। তবে গ্রেফতার বাকিরা তার থানার কনস্টেবল নয় বলে জানান তিনি।
আড়াইহাজার থানায় মামলা দায়েরের বিষয়টি স্বীকার করে থানা পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতাররা সংঘবদ্ধ ছিনতাইচক্রের সদস্য। ডেমরা থানার এসআই মোজাম্মেল হকও এই চক্রের একজন হোতা।
আড়াইহাজার থানার উপপরিদর্শক (এস আই) নাহিদ মাসুম ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, তাদের নারায়ণগঞ্জ ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলাটি ডিবি তদন্ত করবেন।
নারায়ণগঞ্জ ডিবির ওসি নজরুল ইসলাম ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে তিনি ও তার বন্ধু রাসেল মিয়া (২৬) রুপগঞ্জের গাউসিয়া থেকে সিএনজিযোগে নিজ বাড়ি আড়াইহাজারের প্রভাকরদী আসছিলেন। পথে সজীব তার মামা সবুজের (৪০) সাথে দেখা করতে আড়াইহাজারের প্রভাকরদী বাজার সংলগ্ন আবদুর রউফের ভাঙারির দোকানের সামনে কাশবনের মাঠে নামেন। সেখানে যাওয়া মাত্রই এসআই মোজাম্মেলসহ ৫জন তাদের ঘিরে ফেলেন। এসময় মোজাম্মেল তার কাছে থাকা পিস্তল বের করে নিজেদের পুলিশের সদস্য বলে পরিচয় দেন এবং সজীব ও তার বন্ধু রাসেলকে হাতকড়া লাগিয়ে দেন।
এক পর্যায়ে আসামি মোজাম্মেলের সঙ্গে থাকা ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা নিজেদেরকে পুলিশের কনস্টেটেবল বলে পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এবং মামলার বাদী সজীবের কাছে থাকা নগদ ৮২ হাজার ৫শ টাকা, তার বন্ধু রাসেলের ৩৫ হাজার টাকা ও দুজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
এক পর্যায়ে আসামিরা তাদেরকে হাতকড়া পরানো অবস্থায় কাশবনের মাঠ থেকে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে আসেন এবং ধস্তাধস্তি করে একটি সিএনজিতে উঠানোর চেষ্টা করেন। এসময় সজীব ও তার বন্ধুর চিৎকারে কিছু দূরেই টহলরত আড়াইহাজার থানার এএসআই নুরে আলম সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যদের নিয়ে এগিয়ে আসেন।
সেখানে আসামি মোজাম্মেল নিজেদের ডেমরা থানা পুলিশের সদস্য পরিচয় দিলে এএসআই নুরে আলম তাদের পরিচয়পত্র দেখতে চান। আসামি নিজেদের পরিচয়পত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়।
বিষয়টি ছিনতাই আঁচ করতে পেরে এএসআই নুরে আলম আড়াইহাজার থানায় খবর দিলে এসআই নাহিদ মাসুমের নেতৃত্বে অপর একপি পুলিশ টিম ঘটনাস্থলে এসে আসামিদের আটক করে। এসময় অজ্ঞাত এক আসামি পালিয়ে যায়।
উদ্ধার টাকা ছিনতাইয়ের বলে আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন বলে জানান এসআই নাহিদ মাসুম।