নগর সংবাদ।।আড়াইহাজারে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে তিনটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। কেন্দ্র গুলো হলো গাজীপুরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিশনন্দী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বিশনন্দী মাদরাসা। নারায়ণগঞ্জের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তিনটি কেন্দ্রেই সদস্য প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হলে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। এই কেন্দ্রগুলোতে পরবর্তীতে ভোট গ্রহণ হবে।
সরেজমিন ঘুরে ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই বিশনন্দী ইউনিয়নের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে সদস্য প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তিনটি কেন্দ্রসহ ইউনিয়নটির চারটি কেন্দ্রে অন্তত ৩৩টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।
বেলা ১১ টায় ইউনিয়নের ৯নং ২৮ নং দয়াকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ইউপি সদস্য প্রার্থী মোঃ শাহিন তার লোকজন নিয়ে ভোট কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করে। এসময় তার প্রতিপক্ষ সদস্যপ্রার্থী হাবিবুর রহমানের সমর্থকদের সঙ্গে শাহিনের সমর্কদের সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে কেন্দ্রের ভেতরে ও বাহিরে অন্তত ৮টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩ জন আহত হয়েছে। একঘন্টা ভোট গ্রহন বন্ধ থাকার পর পূর্ররায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়।
বেলা সাড়ে ১১ টায় ১ নম্বর ওয়ার্ডের গাজীপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ৩টি ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শাহিন আলম জানান, সদস্য প্রার্থী জাকির হোসেনের সমর্থকরা ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করলে প্রতিপক্ষ প্রার্থী জামির হোসেনের সমর্থকদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এখানে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। বেলা বারটায় বিশনন্দী দারুল উলুম হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও ২৭ নং বিশনন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সদস্য প্রার্থী আলী আকবর ও আব্দুর রহিমের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় কেন্দ্র দুটিতে ২২টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান আলী আকবরের পক্ষে একজন নারী ভোটার চারটি ভোট দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠে। এবিষয়ে আব্দুর রহিমের সমর্থকরা প্রতিবাদ জানাতে আসলে দুইপক্ষের মধ্যে তর্কবিতর্ক ও পরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। দুপুর ১ টায় কেন্দ্রদুটির ভোট গ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
আড়াইহাজার স্বাস্থ্য কেন্ত্রের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আশরাফুল আমিন জানান, রোববার নির্বাচনকে কেন্দ্রে করে সংঘর্ষে ২০ জন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। তাদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর দিকে আড়াইহাজার উপজেলার বাকী ইউনিয়ন গুলোতে শান্তিপূর্ন ভাবে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আড়াইহাজার উপজেলায় মোট ১০টি কেন্দ্রে রোববার ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮ টা থেকে শুরু হয়ে চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। প্রসঙ্গত, ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টিতে বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় এবং রোববার ৪টিতে চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।