নগর সংবাদ।।নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে আরেক সাবেক এমপি আবুল কালামের ছেলে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউসার আশা গোপনে নিজের ভোট চাওয়ার পাশাপাশি নৌকার জন্য ভোট চেয়েছেন বলে এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে। সেখান বিএনপির অনেক নেতাকর্মী জানান, গত নির্বাচনেও আবুল কালাম বিএনপি দলীয় প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেনের পক্ষে জরালো কোন ভুমিকা না রেখে ছেলের নির্বাচন করেছেন। অথচ এবার আইভীর সাথে আতাত করে কাউছার কাউন্সিলর নির্বাচন করেছেন। অনেকেই জানান, আইভীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত জেলা আওয়ামীলীগ নেতা আবু সুফিয়ান কাউছারকে বিজয়ী করতে ব্যাপক ভুমিকা রেখেছেন। যার ফলশ্রুতিতে বিজয়ী হয়ে নব নির্বাচন মেয়র ডা. আইভীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে ছুটে গেছেন। এলাকায় চাউর আছে নির্বাচনের আগে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে সুফিয়ানের সাথে দেনদরবার হয় আবুল কাউছার আশার। আলোচনা ফলপসু হওয়ায় সুফিয়ান সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষ থেকে গ্রীন সিগন্যাল দেয় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আশাকে । করেছেন ২০১৬ সালের নির্বাচনেও গিয়াস উদ্দিন পরোক্ষভাবে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী আইভীর পক্ষে কাজ করেছেন। বিজয়ী হওয়ার পর আইভীকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি নিজ হাতে মিস্টি খাইয়ে দিয়েছেন। নাসিক নির্বাচনে নৌকার পক্ষে বিএনপির পদধারী নেতাদের কাজ করার বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ না খুললেও মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত ৩ নম্বর ওয়ার্ডে (৭, ৮ ও ৯) দুই বার নির্বাচিত কাউন্সিলর আয়শা আক্তার দিনা বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে যারা বিএনপি’র নেতা হয়েও প্রকাশ্যে নৌকার জন্য ভোট চেয়েছে কেন্দ্র তাদের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত নিবেন আমরা শহীদ জিয়ার সৈনিকেরা তা জানতে চাই। মেনে নিলাম তৈমুর আলম ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন নাই। তাই তার পক্ষে আপনারা নামেন নাই। কিন্তু নৌকার পক্ষে সরাসরি ভোট চাওয়ার অনুমতি আপনাদের কে দিয়েছে? যারা নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরাসরি নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছে আশা করি অতি তাড়াতাড়ি কেন্দ্র তাদের ব্যপারে সিদ্ধান্ত নিবেন। এছাড়া ২ নম্বর ওয়ার্ডে জেলা বিএনপিরি সাবেক কোষাধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি ইয়াছিন মিয়ার ছত্রছায়ায় পরিচালিত হয়ে আসছেন। ২০১৬ সালে বিএনপির প্রার্থীকে বাদ দিয়ে আওয়ামীলীগের নির্বাচন করে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। এবারও ইকবাল নৌকার নির্বাচন করেছেন। বিনিময়ে আওয়ামীলীগের কাউন্সিলর প্রার্থীদের বাদ দিয়ে আওয়ামীলীগ নেতাইয়াছিন মিয়া ইকবালের নির্বাচন করেছেন। ২১ নম্বর ওয়াডে এ হান্নান সরকার ও ২২ নম্বর সুলতান উদ্দিন বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত থাকলেও নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছেন। গত ১০ বছর তাদের বিএনপির রাজনীতিতে যতটা না সক্রীয় দেখা গেছে তার চেয়ে বেশি দেখা গেছে আওয়ামীলীগ নেত্রী ডা, সেলিনা হায়াৎ আইভীর পাশে। শুধু তাই নয়, ইকবাল হোসেন, সাদরিল, আশা, হান্নান সরকার, সুলতানরা তাদের স্ব স্ব ওয়ার্ড এ এবার নৌকাকে বিজয়ী করে তাদের অবস্থানের প্রমানও দিয়েছেন। দলীয়ভাবে তদন্ত করলে ঘটনার ভয়াবহ সত্যতা বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। মোস্তাক মার্কা আওয়ামীলীগ হুমায়ুন মৃধা যে কিনা নারায়নগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগ এর যুব ও ক্রিয়া বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন তারই আপন বড় ভাই জাহাঙ্গীর মৃধা নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ালীগের মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে ওপেন কাজ করেছেন মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউছার আশার পক্ষে আবুল কাউছার আশা বি এন পি এর ৫- আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম এর ছেলে। জাহাঙ্গীর মৃধা কেমন আওয়ামীলীগ করে তাহলে এটাতো মোস্তাকের পরিচয় এদের কারনে আওয়ামীলীগ এর ক্ষতি ছারা কোন উপকার হবে না। উপরে উপরে আওয়ালীগ ভিতরে অন্য কিছু এদের থেকে সাবধান। নেতাদের দৃষ্টি আর্কষন করছে ২৩নং ওয়ার্ডের তৃনমূল আওয়ামীলীগ এর কর্মীরা এদের শাস্তী দেয়ার জন্য এরা আওয়ামীলীগ এর কর্মী হতে পারে না এরা হচ্ছে মোস্তাক এর বংশধর। বিএনপির রাজনীতিতে জড়িতে থেকে নৌকার পক্ষে ভোট চাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সদস্য ও এই নির্বাচনে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী হান্নান সরকার সাংবাদিকদের বলেন, গত ১০ বছর সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে কাজ করেছি। এজন্য তার নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছি। তাছাড়া তৈমূর আলম তো বিএনপির প্রার্থী ছিলেন না। সেজন্য নৌকার হয়ে ভোট চেয়েছি। বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থেকে নৌকার পক্ষে ভোট চাওয়া কতটা সমীচিন হয়েছে সেই প্রশ্নের জবাবে হান্নান সরকার বলেন, বিএনপির প্রার্থী থাকলে হয়তো এমনটা করতাম না। ২৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউসার আশা সাংবাদিকদের বলেন, আমি নৌকার পক্ষে ভোট চাইনি। এটা গুজব ছিল। নিজের ভোটইতো ঠিক মতো চাইতে পারিনি। নির্বাচনে জয়ের দু’দিন পর মেয়র আইভীর পা ছুঁয়ে সালাম করার একটা ভিডিও ভাইরাল হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উনি মুরুব্বী মানুষ এজন্য সালাম করেছি, কিন্তু নৌকা পক্ষে ভোট চাইনি। এদিকে নির্বাচনে প্রার্থী কাউসাররের পক্ষে ছিল মোস্তাক মার্কা আওয়ামীলীগ নেতা আবু সুফিয়ান । নির্বাচন চলাকালীন সময় গত ৩ জানুয়ারি বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পদ থেকেও প্রত্যাহার করা হয় তৈমূর আলম খন্দকারকে। ১৮ জানুয়ারী দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তৈমূর আলম খন্দকারকে বিএনপি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। একই দিন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে এটিএম কামালকে বহিস্কার করা হয়। প্রসঙ্গত ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নাসিক নির্বাচনে তৈমূর আলম খন্দকার মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে পরাজিত হন।