মঙ্গলবার (০৩ মে) রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সাত সদস্য।
তিনি বলেন, আমাদের এবারকার এই সাক্ষাৎ নিঃসন্দেহে খুব বেশি আনন্দময় ছিল না। আনন্দময় যতটুকু ছিল এজন্য যে, প্রায় বছর খানেক পর আমরা তার সঙ্গে দেখা করতে পারলাম, তার কথা শুনতে পারলাম এবং আমাদের যে শুভেচ্ছা, তিনি যেন সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন এই প্রার্থনার কথা তাকে আমরা জানাতে পারলাম। সমস্ত দেশবাসী যে তার জন্য প্রার্থনা করছে সেই কথাটাও আমরা জানাতে পারলাম।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আপনারা জানেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এখন অসুস্থ। এই অসুস্থতার মধ্যে তিনি আগেও যেমন দেশবাসীর কথা চিন্তা করেছেন সবসময়। আজকে তিনি ঠিক একইভাবে দেশবাসীর ও দেশের মানুষের অবস্থার কথা জানতে চেয়েছেন এবং বর্তমানে যে সামগ্রিক অবস্থা আছে এই অবস্থার ব্যাপারে অবগত হয়েছেন আমাদের দ্বারা। সবসময় তিনি সেটা কাগজ-পত্রে পড়ছেন, নানা জায়গায় পড়েছেন। তারপরও তিনি আমাদের কাছ থেকে শুনেছেন এবং তার যে উদ্বেগ সেই উদ্বেগ তিনি প্রকাশ করেছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আপনাদের এই কথা জানিয়েছেন যে, ঈদের শুভেচ্ছা তিনি আপনাদের মাধ্যমে সমগ্র দেশবাসীকে জানাতে চান। তার জন্যে দেশবাসীর কাছে তিনি দোয়া চেয়েছেন এবং তিনি দেশবাসীর জন্য দোয়া করেছেন। এদেশের মানুষ যেন ভালো থাকে, সুস্থ থাকে। গণতন্ত্রকে ফিরে পায়, মানুষ তার অধিকার ফিরে পায়- এই প্রার্থনা তিনিও করেছেন।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) এখনো সুস্থ নন। ডাক্তাররা আছেন তারা এই বিষয়ে বলতে পারবেন। এটুকু আমি বলতে পারি যে, এখনো তিনি অত্যন্ত অসুস্থ আছেন। এখনো হেঁটে খাবার টেবিলে যেতেও তার খুব কষ্ট হয়। এটাই বাস্তবতা। তাহলেই আপনারা বুঝতে পারবেন তিনি কেমন আছেন।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে কোনো বার্তা আছে কিনা প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি একই কথা বলেছেন, দেশের জন্য ভালোবাসা তারা যেন প্রবল করে এবং দেশকে তারা যেন মুক্ত করে।
রাত ৮টায় মহাসচিবের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় ঢোকেন। এক ঘণ্টা তারা সেখানে ছিলেন। ‘শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে’ ফিরোজার দোতলায় দলীয় প্রধানের সঙ্গে তারা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সর্বশেষ গত বছরের কোরবানির ঈদের দিন খালেদা জিয়ার দেখা পেয়েছিলেন এই নেতারা। গত রোজার ঈদে বিএনপি চেয়ারপারসন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় দলের নেতাদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়নি।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয় বিএনপি প্রধানকে।
এরপর থেকে গুলশানের ওই বাসায় থাকছেন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত ৭৬ বয়সী খালেদা জিয়া। যেখানে দলের নেতাকর্মী-সমর্থক কেউই নেত্রীর সাক্ষাৎ পান না।
এর আগে ঈদের দিন সকালে খালেদা জিয়ার বোন সেলিনা ইসলাম ও ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারসহ কাছে স্বজনদের নিয়ে দুপুরে খাবার খান খালেদা জিয়া।