নগর সংবাদ।।সুমনসেন চট্টগ্রাম প্রতিনিধি- সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রামের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংগঠন স্বপ্নের বাংলা শিক্ষার্থী ফোরাম। একইসঙ্গে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি ও গুজবের ফাঁদে পা না দিয়ে চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন তারা। শুক্রবার (১৬ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর সিআরবির সাত রাস্তার মোড়ে এক প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ ঘোষণা দেন তারা। কর্মসূচিতে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে সাংবাদিক, রাজনৈতিক, সাামজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন অংশ নেন। এসময় তারা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন। চট্টগ্রামের সকল শিক্ষার্থীর পক্ষে দাবিগুলো তুলে ধরে জেএমসেন কলেজের সদ্য সাবেক ছাত্র ও সংগঠনের সভাপতি ওসমান গনি। দাবি গুলো হলো-১. অতি বিলম্বে পরিবেশ বিধ্বংসী এই সিদ্ধান্ত বাতিলের ঘোষনা দিতে হবে। ২.সিআরবির বাইরে চট্টগ্রামের অন্যত্র যে কোন যায়গায় হাসপাতালটি নির্মাণ করতে হবে। ৩. হাসপাতাল নয় বরং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সিআরবি এলাকায় একটি স্মৃতি সৌধ নির্মাণের দাবি জানানো হয়। ৪. ঐতিহ্যবাহী ডিসিহিলে সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম করতে না পারার যে নিষেধাজ্ঞা তা অচিরেই তুলে নিতে হবে। ৫. অকার্যকর হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোকে আধুনিকায়ন করতে হবে । কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আলোকিত প্রতিদিনের সাংবাদিক সুমন সেন বলেন, ‘আমরা হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধী নই। কিন্তু সিআরবির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধ্বংস করে কাউকে এখানে হাসপাতাল করতে দেওয়া হবে না। সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের প্রক্রিয়া বাতিলের এই দাবি শুধু নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের নয়। আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দিয়ে স্বাধীন সংবাদের সাংবাদিক জুবাইয়ের বলেন, ‘সিআরবির পাহাড় সংলগ্ন এলাকার যে সৌন্দর্য সেটাকে অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। চট্টগ্রামের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। যতদিন পর্যন্ত হাসপাতাল বন্ধের ঘোষণা দিবে না ততোদিন আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। কবি সোমা মুৎসুদ্দি বলেন, ‘সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগের ২৪ ধারা অনুযায়ী বৃটিশ আমলে নির্মিত রেলওয়ের ভবনগুলোকে ঐতিহ্য ভবন ঘোষণা করে পুরো এলাকাকে সংরক্ষিত করা হয়েছে। এখানে শিরিষতলাকে ঘিরে একটি সাংস্কৃতিক প্রাঙ্গন গড়ে উঠেছে। এখানে কোনোভাবেই হাসপাতাল হতে দেওয়া যায় না। সাংবাদিক অলি উল্লাহ হুঁশিয়ারি করে বলেন, দাবি না মানা হলে আন্দোলন আরও প্রসারিত হবে। স্যার অাশুতোষ সরকারি কলেজ ছাত্র ও সংগঠনের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সৌরভ বিশ্বাস বলেন, ‘ডিসি হিলে একটি মুক্তমঞ্চ করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমলাতান্ত্রিক সিদ্ধান্তে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১৯৭৮ সাল থেকে আমরা ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করে আসছি। সেই ডিসি হিলে এখন কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা সিআরবিকে রক্ষার আন্দোলন চালিয়ে যাব, সঙ্গে ডিসি হিল পুনরুদ্ধারের আন্দোলনও করব’। আমরা ৪৮ ঘন্টার আল্টেমেটাম দিলাম এর মধ্যে যদি আমাদের পাঁচ দফা দাবি মেনে না নেয় তাহলে আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হব। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বর্ণা আক্তার, নাহিদা আক্তার শিমু, মোহাম্মদ সাজ্জাদ, বাপ্পি দাস, মোহাম্মদ হাসান,নাহিদ খান প্রমূখ।