প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, আগের আইনগুলো ইংরেজিতে হয়ে গেছে। সেটা বাংলায় করতে গেলে এটা শব্দান্তর না করলে ভাষান্তর করতে হবে। সেই ধরনের অনুবাদক লাগবে যারা সেটা অনুবাদ করতে পারেন। সেটা উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে। আমি আশা করি এখানে সরকারের মন্ত্রীরা আছেন তারা সেই বিষয়ে উদ্যোগ নেবেন এবং আইন মন্ত্রণালয়কে বলবেন যেন তারা বাংলায় অনুবাদ করার উদ্যোগ নেন।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মিলনায়তনে বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতি, ঢাকা আয়োজিত প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, অধিকাংশ আইনের বই ইংরেজিতে। ১৯৮৪ সালের পর থেকে আইন বাংলাদেশে প্রণীত হচ্ছে সবই বাংলায়। এর আগে যত আইন আছে সে আইনগুলো ইংরেজিতে। ইংরেজিতে আইন বাংলায় তর্জমা করা এটা কঠিন কাজ নয়। তবে তত সহজও নয়। কারণ আইনের ভাষাগুলো একটু ভিন্ন রকম।
আইনের বই পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, দেখবেন গল্পের বই পড়তে খুব মজা লাগে। আইনের বই একটা হাতে নিয়ে দেখবেন তো এক দুই লাইন পড়ার পর ইচ্ছা হবে না আর পড়তে। এটা একদিন আমাদেরও ছিল কিন্তু আমরা এখন আনন্দ পাই পড়তে।
আমি আনন্দ পাই, আমাদের বিচারকরাও আনন্দ পান। আইনের ওপর কাজ ঠিকইতো আমরা সারাদিন করি, সবসময় করি। কিন্তু সাধারণ মানুষের বোধে আসে না। তাদের বোধগম্য নয়, এটা ঠিক। সেজন্য নতুন করে যেই আইনগুলো হচ্ছে এগুলো বাংলায় হচ্ছে।
বাংলা ভাষায় বিচারের রায় দেওয়ার বিষয়ে নতুন প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের অনেক বিচারক এখন বাংলায় জাজমেন্ট (বিচারের রায়) দিচ্ছেন। তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন বাংলায় জাজমেন্ট (বিচারের রায়) দিতে। আমাদের সুপ্রিম কোর্টে একটি অ্যাপস আছে। ইংরেজিতে জাজমেন্ট (বিচারের রায়) হলেও সেটি বাংলায় করা যাচ্ছে। তবে দুঃখের বিষয় হলো এ অ্যাপগুলোর যে ল্যাঙ্গুয়েজ (ভাষা), এ ল্যাঙ্গুয়েজগুলোর (ভাষা) যেই বাংলা, এ বাংলা পড়লে আপনি নিজের যেই শ্রুতিমধুর বাংলা ভুলে যাবেন।
তিনি বলেন, এ বাংলা যান্ত্রিক বাংলা। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি। মোস্তাফা জব্বার সাহেব একজন আইটি বিশারদ, তাকে বলবো আরও সহজ কোনো অ্যাপস করা যায় কি না, তিনি চেষ্টা করতে পারেন। তাহলে আমরা যেই জাজমেন্ট (বিচারের রায়) দেই ইংরেজিতে এটা একটা গ্রামের মানুষ যেন বুঝতে পারে। সেইরকম বাংলা তিনি যেন উদ্ভাবন করেন এবং তার সেই উদ্ভাবনী ক্ষমতা আছে। আমরা আশা করি এ লক্ষ্যে তিনি বেগবান হবেন।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতি ঢাকার সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতি ঢাকার সাধারণ সম্পাদক ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।