নগর সংবাদ।।পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে মায়ের অনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখে ফেলায় শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয় বরিশালের উজিরপুরের হারতা এলাকার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র দীপ্ত মণ্ডলকে (৮)। হত্যার পর শিশুটিকে দুই দিন ফেলে রাখা হয় সেলুনে বসার জন্য তৈরি কাঠের সিটের ভেতর।
গত রোববার ভোরে ডোবা থেকে তার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত শিশুর মা সীমা মন্ডলসহ গ্রেফতার ৪ আসামি বুধবার (০১ জুন) সন্ধ্যায় বরিশাল আদালতে হত্যার ঘটনায় স্বীকোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
দীপ্ত মণ্ডল ওই উপজেলার হারতা ইউনিয়নের কাজী বাড়ির দীপক মণ্ডলের ছেলে। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে বড়।
উজিরপুর থানার ওসি আলী আর্শাদ জানান, গত ২৭ মে রাতে ১১টার দিকে দীপ্তর মা সীমা মণ্ডল তার পরকীয়া প্রেমিক নয়ন শীলের সঙ্গে সেলুনের শার্টার আটকে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হন। দীপ্ত তার মাকে খুঁজতে গিয়ে নয়ন শীলের সেলুনের শার্টার টেনে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়।
এ সময় সীমা মন্ডল ও তার পরকীয়া প্রেমিক মিলে গলা টিপে দীপ্তকে হত্যা করেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহ সেলুনে বসার জন্য কাঠের তৈরি সিটের ভেতর
লুকিয়ে রাখেন। দুই দিন সিটের ভেতর থাকায় লাশটিতে পচন ধরে। এতে বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ২৯ মে রাতে বস্তায় ভরে লাশটি অদূরে একটি ডোবায় ফেলে দেন তারা দুজনসহ সেলুন মালিক দম্পতি।
এর আগে গত ২৮ মে দীপ্তর বাবা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। দীপ্ত নিখোঁজের ঘটনায় সন্দেহ হওয়ায় এলাকাবাসী নয়ন ও রতনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তারা দীপ্তকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। খবর পেয়ে পুলিশ দীপ্তর লাশ উদ্ধার করে বরিশাল মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে নয়ন ও সেলুন মালিক দম্পত্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তারা নয়ন ও তার পরকীয়া প্রেমিকা সীমার অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় শিশুটিকে হত্যা এবং হত্যার পর লাশ লুকাতে সহযোগিতার কথা স্বীকার করেন। পরে সীমাকেও আটক করে পুলিশ।
দীপ্তর বাবা দীপক মণ্ডল বাদী হয়ে ৩১ মে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার (১ জুন) বিকেলে ৪ জনকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। আদালতে ৪ জনই দীপ্ত হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।