স্টাফ রিপোর্টার ঃ সিদ্ধিরগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী ভূমিদস্যু ও চিহ্নিত মাদকের গডফাদার অস্ত্রধারী ক্যাডার শাহজাহান দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর স্থানীয় বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক নেতাদের শেল্টারে আবারও এলাকায় ফিরে আসায় জনমনে আতংক ও শংকা বিরাজ করছে। যারা শাহজাহান বাহিনীর অত্যাচারের কথা ভুলেনি তারা আজ সজাগ হয়ে ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করছে।
জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন গোদনাইল পুরাতন আইলপাড়া এলাকার সরকার বাড়ির মাথামোটা হিসেবে পরিচিত শাহজাহান ওরফে কৃষ্ণা স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের আমলে অস্ত্র, মাদক ব্যবসা সহ ভূমিদস্যুতায় ছিল পারদর্শী। অস্ত্রের ঝনঝনানিতে এলাকাবাসী আতংকিত থাকতো। শাহজাহানের অন্যতম সহযোগী ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা শহিদুল্লাহ ওরফে কালা মানিক ও কিশোর গ্যাংয়ের লিডার রাজিব-সজিব যমজ দুই ভাই। আর হিয়াইল্যা ইয়াছিন কৃষক লীগের সেক্রেটারী পরিচয়ে এলাকার মধ্যে ছেচরামি করে বেড়াতো এবং যে কোন বাড়ি ঘরে গিয়ে মহিলাদের বিরক্তসহ অনেক ভাড়াটিয়া বাসা বাড়ির লোকজনকে জিম্মি করে চাঁদা আদায় করতো। থানা পুলিশ এলাকায় প্রবেশ করলে সবার আগে হিয়াইল্যা ইয়াছিন সামনে গিয়ে হাজির হয়ে উল্টো বিভিন্ন সাধারণ মানুষকে টাকা পয়সার জন্য হয়রানী করত। গত শুক্রবার হিয়াইল্যা ইয়াছিন সন্ত্রাসী শাহজাহানের সাথে এলাকায় প্রবেশ করলে এলাকার যুব সমাজ ইয়াছিনকে দৌড়ানি দেয়। কিন্তু শাহজাহানকে যাতে কেউ কিছু না বলে এই জন্য শেল্টার দেয় স্থানীয় এলাকার লেবাশধারী চাটুকার বিএনপি নামধারী নেতা। যদিও ঐসকল বিএনপি নামধারী নেতারা আওয়ামী আমলে পাচাটা কুত্তা হিসেবে পরিচিত ছিল। এখন বিএনপির নেতা বনে গেছে। তবে বিএনপির জেলা ও মহানগর কমিটির দায়িত্বশীল নেতাদের কাছে এই বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। এদিকে শাহাজাহানের বিরুদ্ধে ভূমিদস্যুতা, হত্যা ও অস্ত্র মামলা সহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। সরকার পতনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি বর্ষনকারী ও নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ গডফাদার সাবেক এমপি শামীম ওসমানের দোসর অস্ত্রবাজ শাহজাহান ও মাদক বিক্রেতা শহীদুল্লাহ সহ অয়ন ওসমানের কিশোর গ্যাংয়ের লিডার রাজিব-সজিবকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার আহ্বান জানান এলাকাবাসী। ইতিমধ্যে শাহজাহান সহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। তারপরও গত শুক্রবার প্রকাশ্যেই শাহজাহান ও তার বাহিনী এলাকায় চাটুকারদের নিয়ে মহড়া দিলে আতংক ছড়িয়ে পরে। ছেচরা হিয়াইল্যা ইয়াছিন, চোকলা সাইদুল, শহীদুল্লাহর অন্যতম সহযোগী মাদকের ক্যাশিয়ার হিমেল, স্বপন সহ আরো কয়েকজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী এলাকায় অরাজকতা সৃষ্টি করার জন্য ঘাপটি মেরে বসে আছে। ওরা কখনো শামীম ওসমানের নাম, কখনো শাহ নিজামের নাম, আবার কখনো অয়ন ওসমানের নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তার করে মানুষকে অনেক ক্ষতি করেছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান ও সেক্রেটারী ইয়াছিন ওদের শেল্টার দিতো বলেও অভিযোগ রয়েছে। শাহজাহানের বিয়াই থানা যুব লীগের সেক্রেটারী পরিচয় দানকারী মনসুর এবং শহীদুল্লাহর নিকট আত্মীয় থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী ইয়াছিনের প্রভাবেও ওরা যা ইচ্ছা তাই করে বেরিয়েছে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে ভাব বিরাজ করছে। অন্যদিকে উপরোক্ত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোন সংবাদ প্রকাশ হলে সাংবাদিকদেরও ছাড় দিবে না বলেও হুমকী ধামকী দিয়ে বেড়াচ্ছে। বর্তমানে থানা পুলিশ নিস্ক্রিয় এবং প্রশাসনিক ভাবে পুরোপুরি অভিযান পরিচালনা না হওয়ায় সন্ত্রাসীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর কাছে দ্রুত আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে গোদনাইল আইলপাড়াবাসী।