পারিবারিক কলহের জেরে,কনস্টেবল নিজের রাইফেল দিয়েই নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেন
পঞ্চগড়ে দায়িত্বে থাকাকালীন গুলিবিদ্ধ হয়ে ফিরোজ আহমেদ (২৫) নামে পুলিশের এক কনস্টেবল মারা গেছেন।
ওই কনস্টেবল নিজের রাইফেল দিয়েই নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে পঞ্চগড় পুলিশ লাইনে প্রথম জানাজা করে মরদেহ গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায় পুলিশ।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) গভীর রাতে পঞ্চগড় জেলা শহরের সোনালী ব্যাংকের ভেতরে এই গুলিবিদ্ধ হন কনস্টেবল ফিরোজ আহমেদ।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে ফিরোজ আত্মহত্যার পথ বেছে নেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ না থাকায় পঞ্চগড় সদর থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ ও পরিবার ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, প্রথম স্ত্রী হনুফা মিশু ও তার ৬ মাসের ছেলে ফারদিন থাকার পরও মোবাইল ফোনে পরিচয়ে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন পাশ্ববর্তী বিরামপুর উপজেলার এইচএসসি পরীক্ষার্থী সোবহানী তাবাস্সুম উপমার (১৭) সঙ্গে। প্রায় তিন মাস আগে তারা বিয়ে করেন। পঞ্চগড়ে বাসা ভাড়া নিয়ে গত একমাস ধরে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে থাকেন। গত কয়েকদিন ধরে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ফিরোজের দাম্পত্য কলহ চলছিল। এর মাঝে বৃহস্পতিবার দিনগত গভীর রাতে ডিউটিরত অবস্থায় নিজের রাইফেল দিয়ে নিজেকে গুলি করেন ফিরোজ। গুলির শব্দ পেয়ে তার সহকর্মীরা দৌড়ে আসেন। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসকরা জানান, গুলিটি তার থুতনির নিচ থেকে মাথার ভেতর দিয়ে উপরে বেরিয়ে গেছে। পরে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে পুলিশ লাইন্সে ওই পুলিশ সদস্যের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
পরে তার পরিবারসহ মরদেহ পুলিশ পাহাড়ায় নিয়ে যাওয়া হয় ফিরোজের গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে। সেখানে জানাজা শেষে দাফন কার্য সম্পন্ন হবে।
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ জানাজার জন্য পুলিশ লাইনে নেওয়া হলে মা ও দুই স্ত্রীর পাশাপাশি কান্নায় ভেঙে পড়েন সহকর্মীরা। এতে শোকাহত পরিবেশের সৃষ্টি হয় পুরো পুলিশ লাইন্সজুড়ে।
নিহত ফিরোজের দ্বিতীয় স্ত্রী উপমার মা ফাতেমা খাতুন বলেন, আমার মেয়ে যে বিয়ে করে পঞ্চগড়ে আছে আমরা কেউ জানতাম না। ফিরোজের আগের স্ত্রী ও পরিবারও জানতো না। এই ঘটনার পর এখন সব কিছু জানলাম। আমার মেয়ের শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। সে অসুস্থ হলেও ফিরোজ তাকে হাসপাতালে ভর্তি না করায় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে বলে শুনেছি।
প্রথম স্ত্রী হনুফা মিশু চাকরির সুবাদে পঞ্চগড়ে অবস্থানের কথা জানলেও নতুন বিয়ের বিষয়েটি অজানা বলে জানান।
হনুফা মিশুর বড় ভাই মাসুদ রানা বলেন, আমরা দুই বিয়ের বিষয়ে কিছু জানি না। আজ খবর পেয়ে পঞ্চগড়ে এসে বিষয়টি জানলাম। গত এক বছর আগে ফিরোজ পঞ্চগড়ে আসেন।