নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোর্শেদ আলম ও সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাধন বসাককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
রোববার (১২ মার্চ) দুপুরে হাইকোর্টের জামিনের মেয়াদ শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে বিচারক মো. আস-সামস জগলুল হোসেন তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। নগরসংবাদ কে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান বুলবুল।
তিনি বলেন, পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে তারা হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের জামিন পান। মেয়াদ শেষে তারা আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী আনিসুর রহমান আলমগীর বলেন, ‘২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম স্বপন, বাবুল এবং আমাকে সোনারগাঁ থানার সাবেক ওসি মোর্শেদ আলম ও এসআই সাধন বসাক বাসা থেকে তুলে নিয়ে থানায় নিয়ে মারধর করে নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে তারা জাহিদুল ইসলাম স্বপনের কাছে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলারও হুমকি দেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তীতে জাহিদুল ইসলাম আদালতে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। এ মামলার সাক্ষী ছিলাম আমি। আসামিরা আমাকে সাক্ষ্য না দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেন। আমার বাড়িতে গিয়েও হুমকি দেন। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আমি নিজে বাদী হয়ে আরও একটি মামলা করি। আদালত মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। সেই তদন্তের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। আজ তারা আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন চাইলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন। আমি এ মামলায় সুষ্ঠু বিচার চাই।’
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. কামরুল আহসান বলেন, আমরা ২০২০ সালে একটি মামলা করি। আদালত জুডিসিয়াল তদন্তের জন্য পাঠান। সেই তদন্তের প্রতিবেদন আদালতে আসার পর আমাদের কাছ থেকে শুনে মামলাটি আমলে নেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মামলাটি ছিল হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে। এ মামলায় আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। আজ আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেছে। আমরা কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, এ বার্তা দেওয়ার জন্যই মামলাটি করা।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান নগরসংবাদ কে বলেন, আদালত দুজন পুলিশ সদস্যকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। তারা হাইকোর্ট থেকে জামিনে ছিলেন। মেয়াদ শেষে আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়েছিলেন। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।