নগর সংবাদ।।একই স্কুলের মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা ছিলো। গত প্রায় তিন বছর ধরে জড়িয়ে পড়ে মাদক ক্রয় ও সেবনে।
সম্প্রতি প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এক বন্ধুকে খুন করে নদে ফেলে দেয় বাকিরা।
গত ১৬ জুলাই সাভারের আমিন বাজার কেবলার চর এলাকার তুরাগ নদ থেকে ভাসমান ইমন রহমানের (২১) মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাসু (২২) ও তার অন্যতম সহযোগী বিপুল চন্দ্র বর্মণকে (১৯) গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১)।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দিনগত রাতে টাঙ্গাইল ও গাজীপুরে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাসুর বাড়ির বিছানার নিচ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ১টি দা এবং বিপুল চন্দ্র বর্মণের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।
ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, গত ৭ জুলাই রাতে গাজীপুর কালিয়াকৈর রসুলপুরের ইমন রহমান (২১) রাতের খাবার খেয়ে তার মায়ের কাছ থেকে ২০০ টাকা নিয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে বাসা থেকে বের হয়। প্রথমে ঘটনাটি স্বাভাবিক মনে হলেও ইমনের বাসায় ফিরতে দেরি হওয়ার কারণে পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। পাঁচ দিন ইমনের কোনো সন্ধান না পেয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।
গত ১৬ জুলাই আমিন বাজার কেবলার চরে তুরাগ নদে একটি মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা নৌ-পুলিশকে খবর দেয়। পরে মরদেহটি ইমন রহমানের বলে শনাক্ত করে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখার সহায়তায় তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টাঙ্গাইলের আবাদপুর গ্রাম থেকে রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাসু (২২) ও তার অন্যতম সহযোগী বিপুল চন্দ্র বর্মণকে (১৯) কালিয়াকৈরের কালামপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ইমনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, রাশেদুল ইসলাম রাসু, বিপুল চন্দ্র বর্মণ ও নিহত ইমন একই স্কুলে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী। ৫-৭ বছর ধরে পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত তারা। তবে গত ২-৩ বছর ধরে এক সঙ্গে মাদক সেবন করত। ইমনের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আগে থেকেই বিরোধ ছিল রাসুর।
সম্প্রতি প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে ইমনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছে। রাসু চার সহযোগীসহ ইমনকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী রাসু গত ৭ জুলাই রাতে ফোন করে ইমনকে বাড়ির পাশে বট গাছতলায় আসতে বলে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সেখানে রাসু, বিপুলসহ অন্য অভিযুক্তরা আগে থেকেই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছিল। ইমন সেখানে পৌঁছালে তার প্রেমিকাকে গালিগালাজ শুরু করে রাসু। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাসু দা দিয়ে ইমনকে কোপ দেয়। এ সময় অন্যরাও ধারালো অস্ত্র দিয়ে ইমনকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। পরে ইমনকে তুরাগ নদীতে ভাসিয়ে দিয়ে চলে যায় তারা।
এ ঘটনায় গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। হত্যায় জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।