আমাদের দেশীয় ছবির আধুনিকতা এবং হাল ফ্যাশনের রূপকার ছিলেন সালমান।
সাবলীল অভিনয় গুণে অতি অল্প সময়ে দর্শক, ভক্তদের হৃদয়ে পাকাপোক্ত অবস্থান তৈরি করে নিতে সক্ষম হন তিনি।
আজও তার অভিনীত কোনো ছবি বা গানের দৃশ্য দেখলে নিজের অজান্তে দুই চোখ অশ্রুসিক্ত হয়। অকালপ্রয়াত এই অভিনেতা আমাদের মাঝে নেই, এ কথা মনে পড়লে আজও আমাদের ভক্তদের বুকের ভেতরটা কেমন যেন হাহাকার করে ওঠে!
বেঁচে থাকলে বাংলা চলচ্চিত্রের ক্ষণজন্মা চিত্রনায়ক সালমান শাহর বয়স হতো ৫০ বছর। হয়তো এই বয়সেও অজস্র ভক্ত-দর্শকদের অভিনয় মুগ্ধ করতে পারতেন তিনি। কিন্তু তা আর হলো না। অকালে চলে যেতে হলো এই বিস্ময় বালককে। তাকে ছাড়াই ২৫ বছর ধরে প্রিয় নায়কের জন্মদিন পালন করছেন সালমানভক্তরা।
১৯৭১ সালের ১৯শ সেপ্টেম্বর সিলেট নগরীর দাড়িয়াপাড়ায় সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে সালমান শাহ জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা কমরউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা এবং তার মা নীলা চৌধুরী এক সময়ে রাজনীতি করতেন, একাধিকবার সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিয়েছেন।
বিটিভিতে অভিনয় করে শিশুশিল্পী হিসেবে সালমান শাহর ক্যারিয়ার শুরু হয়। অভিনয় করেছেন টিভি নাটক ও বিজ্ঞাপনে। ১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে সালমান শাহর। প্রথম সিনেমাতেই দর্শকদের মন জয় করে নেন তিনি। তাই এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
ক্ষণজন্মা নায়ক সালমান শাহ। তার চলচ্চিত্র জীবন শুরু হয় চিত্রনায়িকা মৌসুমীকে সঙ্গে নিয়ে। প্রিয় বন্ধু সালমান সম্পর্কে মৌসুমী বলেন, ‘চার বছরের ক্যারিয়ারে সালমান উপহার দিয়েছেন ২৭টি সফল ছবি। তারা মৃত্যুর পর কেটে গেছে দুই যুগ। তার প্রতি মানুষের ভালোবাসা বিন্দুমাত্র কমেনি। দিন যতোই যাচ্ছে, সালমানের প্রতি মানুষের ভালোবাসা আরও বাড়ছে। ‘
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৫ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন সালমান শাহ। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ সাল, মাত্র তিন বছরে তিনি অভিনয় করেছেন ২৭টি সিনেমাতে। এর মধ্যে বেশিরভাগ সিনেমাই ছিল হিট। তালিকায় রয়েছে- ‘তুমি আমার’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘সুজন সখি’, ‘বিক্ষোভ’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘বিচার হবে’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘তোমাকে চাই’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘জীবন সংসার’, ‘আনন্দ অশ্রু’র মতো সিনেমা।