নগর সংবাদ।। বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় ছেলে সন্তান না হওয়ায় নির্যাতন করে পারভিন বেগম নামে এক গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (২৯ মে) সন্ধ্যায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিন কন্যা সন্তানের জননী ওই গৃহবধু মারা যান।
নিহতের ভাই রিয়াজ সিকদার জানান, ছেলে সন্তান না হওয়া এবং পাকাঘর নির্মাণের জন্য বাড়ি থেকে টাকা এনে না দেওয়ার অযুহাতে পারভিনের ওপর নির্যাতন চালানো হতো।
পারভীনের মা কল্পনা বেগম জানান, পরপর তিন কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ায় পারভিনের প্রতি অসন্তুষ্ট হন তার স্বামী। পরে নানানভাবে নির্যাতন চালাতে শুরু করেন। এর জের ধরে বৃহষ্পতিবার (২৬ মে) পারভীন ও তিন কন্যা সন্তানের ভরণপোষন দিতে পারবেন না বলেও জানিয়ে দেন তিনি। এর প্রতিবাদ করলে পারভিনকে বেধরক মারধর করা হয়। পরে শুক্রবার (২৭ মে) পারভীন বাবার বাড়িতে এসে নির্যাতনের বিষয়টি পরিবারকে জানায়।
তিনি আরও বলেন, শরীরে আঘাতের চিহ্ণ দেখে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু সন্তানের কথা ভেবে পরদিন পারভীন স্বামীর বাড়িতে চলে যান। এরপর রোববার বিকেলে আবার নির্যাতন করে অসুস্থ অবস্থায় পারভিনকে হাসপাতালে নিয়ে যায় শশুরবাড়ির লোকজন। সন্ধায় তার মৃত্যুর খবর আসে।
নিহতের বাবা মানিক সিকদার বলেন, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে ও ছেলে সন্তান না হওয়ায় প্রায়ই পারভীনকে মারধর করতো তার স্বামী। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শুক্রবার তিনি বাড়িতে চলে এসেছিলেন। কিন্তু তিন মেয়ের কথা ভেবে আবার স্বামীর বাড়িতে ফিরে যান।
এরপর রোববার আবারও পারভীনের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায় তার স্বামী। একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। সেখানে অবস্থার অবনতী ঘটলে তাকে বরিশালে রেফার করে চিকিৎসক। পরে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান।
তিনি আরও বলেন, ধরা পড়ার ভয়ে রোববার রাতেই এলাকা ছেড়ে পালান আক্তার সরদার। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
কাজীর হাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুবায়ের আহমেদ জানান, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।