সোমবার ১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ সকাল ১০:৩৭
শিরোনামঃ
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম বিতরণ করবে জাতীয় পার্টি গণঅভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে গণঅভ্যুত্থানের নায়ক, নেতা ও অংশগ্রহণকারীদের টার্গেট করে হত্যা করা হচ্ছে-(এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। যেকোনো মূল্যে দেশে নির্বাচন হতে হবে -বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বাড্ডার গুদারাঘাটে চলন্ত বাসে আকস্মিকভাবে আগুন শরিফ ওসমান হাদীর উপর হামলা বাংলাদেশের অস্তিত্বের ওপর আঘাত-প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশের বিশিষ্ট অতিথিদের লোকনাথ ধামে আগমন– ভক্তদের মাঝে উৎসবের আমেজ নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করবে সরকার -প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ধানের শীষের পক্ষে শো ডাউনে ও শ্লোগানে মুখরিত  চৌহালীর উমারপুর পথশ্রী উন্নয়ন নিয়ে, কামারহাটি পৌরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা সাংবাদিক সম্মেলন করেন।। তপন থিয়েটারে কার্নিভাল লেখক শিল্পী সমন্বয় সমিতির আয়োজনে জমকালো নাট্যসন্ধ্যা

বাবা হত্যার বিচার,৯ বছরে আইনজীবী হয়ে মামলার লড়াই

nagarsangbad24
  • প্রকাশিত: জুলাই, ২৫, ২০২২, ৯:০৪ অপরাহ্ণ
  • ৪৩১ ০৯ বার দেখা হয়েছে

নগর সংবাদ।।বাবাকে যখন হত্যা করা হয় তখন ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন হাফেজ হোছাইন মোহাম্মদ এরশাদ। বাবা হত্যার বিচার নেওয়ার জন্য উচ্চ মাধ্যমিক শেষে আইন বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন।

একদিন বড় হয়ে আইনজীবী হলেন, বাবার হত্যাকাণ্ড মামলায় বাদীর পক্ষে লড়েছেন। অবশেষে বাবা হত্যার বিচার নিলেন। এ যেন এক সিনেমার কাহিনি। এমনটাই ঘটেছে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস ওয়াহিদের আদালতে লোহাগাড়া থানার নুরুল আলম হত্যা মামলায়।

 

লোহাগাড়া থানার আধুনগর ইউনিয়নে রুস্তমের পাড়ার নুরুল কবির তার বড় ভাই নূরুল ইসলামের পুত্রকে বিদেশ নিয়ে যায়। সেই টাকাগুলো দাবি করলে নুরুল ইসলাম ও তার ছেলেদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়৷ একপর্যায়ে ১৯৯৯ সালের ৬ ডিসেম্বর বাড়িতে হামলা করলে বাড়ি থেকে পালিয়ে আজলা পুকুর পাড়ে চলে যায় নুরুল আলম। সেখানে দেশি অস্ত্র দিয়ে চোখে ও মাথায় আঘাত করে নুরুল কবিরকে হত্যা করা হয়। একই নুরুল কবিরের স্ত্রী খালেদা ইয়াসমিন লোহাগাড়া থানায় ৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করে। তদন্ত শেষে ২০০২ সালের ২১ ডিসেম্বর ৬ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। ২০০৩ সালে ১৩ জানুয়ারি ৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় আদালতে ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়৷ আসামি পক্ষে ৩ জনের সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত।

সোমবার (২৫ জুলাই) দুপুরে তৃতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস ওয়াহিদের আদালত পিতা ও পুত্রসহ চারজনকে যাবজ্জীবন, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২ বছরের কারাদণ্ড দেন। আসামিরা হলেন- নুরুল ইসলাম, তার পুত্র ওসমান গণি, সরওয়ার কামাল ও আব্বাস উদ্দীন। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- নূর ইসলামের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ও তার মেয়ে নাছিম আক্তার।

নুরুল আলমের ছেলে অ্যাডভোকেট হাফেজ হোছাইন মোহাম্মদ এরশাদ বলেন, ১৯৯৯ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবা হত্যার সময় ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে চুনতী হাকিমিয়া কামিল মাদরাসা ছাত্র ছিলাম। বাবার হত্যার পর থেকে মায়ের স্বপ্ন ছিলেন আইনজীবী বানানোর। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য নিয়মিত পড়ালেখা করতাম। পরিবারের সকল সদস্য প্রবাসী হওয়ার সুবাদে আমার জন্য কাতার থেকে রাজমিস্ত্রির ভিসা পাঠানো হয়। কিন্তু ভিসা আসার পরও বাবার হত্যার বিচারের জন্য প্রবাসে যাওয়া হয়নি।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে অনার্স শেষ করে ২০১১ সালের শেষের দিকে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতিতে শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে পেশায় অন্তর্ভুক্ত হই। কোর্টের বারান্দায় এভাবে ঘোরা, যে কষ্টটা আমাকে এই ৯ বছর করতে হয়েছে, এই ধরনের কষ্টের কথা আমি চিন্তা করিনি। ২০০৩ সালে তৃতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটির বিচার শুরুর পর আমার মা, ভাইকে লোহাগাড়ার আধুনগর রুস্তমের পাড়া বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম কোর্টে যেতে হতো। আমার মা একজন সাধারণ গৃহিণী, কোর্ট-কাছারি যারা কখনো দেখেননি, কিন্তু কষ্টটা তো কম করেননি। সাক্ষ্যপ্রদান থেকে শুরু করে প্রসিডিয়াল যেসব স্টেপ রয়েছে সেসব করা, কথা বলা, নানা ধরনের বাধার সম্মুখীন হওয়া। আমি তখন আইনের ছাত্র ছিলাম না। মা কখনো কখনো হতাশ হয়ে যেতেন। তখন মা’কে আমি সাহস জোগাতাম, ধৈর্য ধারণ করেন ফলাফল আসবে।

২০১২ সাল থেকে মামলাটির যাবতীয় কার্যক্রম আমি দেখাশোনা করতাম। আজকে রায়ের সময় মা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ে পুরাপুরি সন্তুষ্ট না হলেও রায় কার্যকর হলে খুশি হব।

হোছাইন মোহাম্মদ এরশাদ বলেন, ২০০৮ সাল থেকে আইনের ছাত্র হিসেবে মা’কে সাহায্য করতাম, কিন্তু আমি তো তখন আইনজীবী ছিলাম না। আর আমরা একটা সাধারণ পরিবার। আমাদের পরিবারে চার ভাই এক বোনের মধ্যে তিনভাই প্রবাসী, কিন্তু কেউ আইনজীবী না। কোর্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকলে, আমরা তখন বুঝে ফেলেছি। আমার মা, ভাই, আমি দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই যে আমার পেশাটা আইনজীবী হতে হবে। তা না হলে আমরা যোগাযোগ করতে পারব না। যদিও এটা ফৌজদারি মামলা। অর্থাৎ এই মামলা পরিচালনা করবে রাষ্ট্রপক্ষ। যদিও আমরা চাইলে অনেক আইনজীবী অ্যাপয়েন্ট করতে পারি। কিন্তু আমাদের তো সেই সামর্থ্য ছিল না। আসামিপক্ষ যেমন ৪-৫ জনের মতো আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিলেন। আমাদের হয়তো অনেক আইনজীবী স্বউদ্যোগে সাহায্য করেছেন।

তিনি আরও বলেন, আসামিরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে বাড়িতে গেলে নানা ধরনের ভয় কাজ করতো। আসামিদের কি কারাদণ্ড হবে?  যার কারণে নিয়মিত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে হয়। সবসময় যোগাযোগ করতে হয়। এছাড়া আইনের ছাত্র হওয়ায় তা আরও সহজ হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অনেক কষ্টের মধ্যেও আমার মা ও ভাই চেয়েছে যে আমার যাতে পড়াশোনা ঠিকভাবে শেষ হয়। যাতে পরবর্তীতে মামলা দেখাশোনা করা ও রাষ্ট্রপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা সহজ হয়। কারণ মামলার আগে-পেছনে কত যে কাজ করতে হয়। আবার কোর্টে শত শত মামলা পড়ে থাকে। সব বিষয় বিবেচনা করেই আমার আইনজীবী হওয়া ছাড়া আর কোনো পথ ছিল না।

এ বিভাগের আরও খবর...

পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  

Archive Calendar

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | নগর সংবাদ
Design & Developed BY:
ThemesCell