প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন অযথা একটা ধুম্রজাল সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সবচেয়ে অবাক লাগে কথা নাই, বার্তা নাই হঠাৎ করে চালের দাম বেড়ে গেল! জিনিসের দাম বেড়ে গেল! করোনাভাইরাসের অতিমারি, এর পরে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ; এর পর নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে। শুধু বাংলাদেশ না উন্নত দেশগুলোও ধাক্কা সামলাতে পারছে না।
তিনি বলেন, গম, চিনি, ভোজ্য তেল, গ্যাস আমাদের বাইরে থেকে কিনতে হয় কারণ, আমাদের যা আছে তা চাহিদার চেয়ে অনেক কম। বাংলাদেশ ১৭ কোটি মানুষের দেশ। যেসব জিনিস বাইরে থেকে আনতে হয় সেগুলোর উচ্চ মূল্য, পরিবহন ব্যয় বেড়েছে; যে কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নিজস্ব উৎপাদন বাড়াতে বলেছি। এবারও আমাদের ফসল ভালো হয়েছে, চাল উৎপাদন বেড়েছে। তারপরও হঠাৎ দাম বেড়ে যাওয়া ভরা মৌসুমে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। এটার পেছনে কারা আছে এটা একান্তভাবে বের করা দরকার। শুধু দরকার না, এদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে; এটা আমরা আগামীতে করবো।
হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, যেকোনো দুরভিসন্ধিমূলক কোনো জিনিস যদি মজুদ করে রাখে এমন যাদেরই পাওয়া যাবে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। দরকার হলে জেলে ঢুকিয়ে দিতে হবে। আগামীতে আমরা সেই ব্যবস্থাটাই নেব। এখন থেকে প্রথমে ওই জায়গায় আঘাত করতে হবে। ডিম মজুদ করে রাখা হয়। পেঁয়াজের একটার পর একটা বস্তা ফেলে দেওয়া হল। এটা কোন ধরণের কথা? মানুষের খাবার নিয়ে খেলা- এর তো কোনো অর্থ হয় না। আর এই ভরা মৌসুমে চালের দাম বেড়ে যাওয়ার কথাও না। বরং এ সময় তো জিনিসের দাম আরও কমে!
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরকারি-ফলমূল আমাদের সরবরাহের কোনো অভাব নেই। যেকোনো কৃষি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিলে ভোক্তাদের কষ্ট হয়। কৃষক যদি দাম পায়, তারা খুশি হয়। কৃষক ন্যায্য দাম পাচ্ছে। কিন্তু পরিবহনসহ সব খরচ মিলিয়ে যে দাম হওয়ার কথা, তার চেয়েও বেশি। সেজন্যই দুরভিসন্ধি নিয়ে যদি কেউ মজুদ রাখে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা আমরা নেব। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
সরকার প্রধান আরও বলেন, নির্বাচন শেষ হওয়ার পর নানা চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এই কৌশল নেওয়া হচ্ছে ৷ নির্বাচন শেষ হওয়ার পর আরও কিছু চেষ্টা করা হয়েছে- গার্মেন্টসের মজুরি বাড়ানো হলো, তার পরও রাত বারটার সময় গার্মেন্টস শ্রমিকদের আন্দোলন! এটা করে ব্যর্থ হয়েছে; এখন অন্যভাবে নামতে চাচ্ছে। সেভাবে করতে দেব না। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। মানুষ আনন্দিত, খুশি৷ এখন পর্যন্ত যে উন্নয়ন করেছি এর সুফল যেন জনগণ পায়, সেই চেষ্টাই করছি।