নগর সংবাদ।। রাজধানীর মিরপুরে মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় শিক্ষার্থী রাশেদ হোসেনকে (২০) ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার। পুলিশ বলছে, সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
রোববার নিহত রাশেদের বাবা রেজাউল করিম মিরপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-৫৭।
মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন— মাহমুদুল হাসান জায়েফ (১৯), তনজিল মাহবুব অপু (১৯), ফেরদৌস (১৮), ফাহিস হাওলাদার (১৮) রাফায়েল ইসলাম রিফাত (১৮), সাহান (১৮), রিফাত (১৮), সিহাদ হোসেন শিশির (১৮), রোহান (১৮), সোহাগ (১৮), প্রিন্স (১৮) ও অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন।
এজাহারে রাশেদের বাবা বলেন, ২২ জুলাই বিকেল সাড়ে ছয়টায় কাফরুল থানা এলাকার ব্লক ‘এ’, টিনশেড কলোনির ১২ নম্বর রোডে তানজিল মাহবুব অপু ও রোহান নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করা অবস্থায় আমার ছেলে রাশেদ ও তার বন্ধু শাকিল আহমেদ বাধা দেয়। আসামি তানজিল মাহবুব অপু ও রোহান আমার ছেলে ও তার বন্ধুকে চড়থাপ্পড় মেরে চলে যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৩ জুলাই পৌনে সাতটার দিকে মিরপুর মডেল থানার ১০-নম্বর, ব্লক-সি, মিরপুর ওয়াসা সংলগ্ন সাইফুলের চায়ের দোকানের সামনে আমার ছেলে রাশেদ, তার বন্ধু শাকিল আহমেদ এবং ফারদিনকে পেয়ে আসামিরা সঙ্গবদ্ধ হয়ে বাঁশের লাঠি ও গাছের ডাল দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এক পর্যায়ে আসামি সোহান তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে আমার ছেলে রাশেদকে পিছন দিক থেকে আঘাত করে। পিঠের মাঝখানে ও পিঠের নিচের দিকের বাম পাশে গুরুতর জখম করে। পথচারী ও রাশেদের বন্ধুরা মিলে প্রথমে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আজমল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আরেকটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক রাশেদকে মৃত ঘোষণা করেন।
রেজাউল করিম বলেন, থানার নিয়ম কানুন আমি বুঝি না। আমার ছেলে লেখাপড়া ও নামাজ পড়তো। বিএন কলেজ থেকে রাশেদ এবার উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছিল। অনার্সে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করছিল সে। আমি জেনেছি, ২৩ জুলাই দুজন ছেলে রাস্তায়মাদক সেবন করছিল। এর প্রতিবাদ করে রাশেদ বলে, ‘এই রাস্তা দিয়ে মুরুব্বিরা চলাফেরা করে। এখানে গাঁজা খাও। ’ এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গে হাতাহাতি হয়।
নিহতের ভাই হাবিবুর রহমান বলেন, ২৩ জুলাই সন্ধ্যায় মিরপুর ১০ নম্বরের সি ব্লকে ওয়াসা সংলগ্ন সাইফুলের চায়ের দোকানের সামনে আমার ভাইকে ওরা ছুরিকাঘাত করেছে। বখাটে ছেলেরা আমার ভাইয়ের ওপর হামলা করেছে। অপু, দিপু ও টিপু একসাথে প্রথমে ঝগড়া লাগে। দিপু-টিপু এরা দুজন জমজ ভাই। ২৩ জুলাই ওদের সাথে বাকিরা যুক্ত হয়ে আমার ভাইকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।
মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সঞ্জীব কুমার সাহা বলেন, রাশেদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৬ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বের জেরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে। এরা সবাই সমবয়সী।