রূপগঞ্জে নৌ-পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি বহু অপকর্মের হোতা ভয়ঙ্কর আকবর বাদশাকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি ভূমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী ও জুয়াড়িদের নেতা আকবর বাদশাকে রোববার (২৫ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে তারাব পৌরসভার বাঁশপট্টি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান র্যাবের মিডিয়া অফিসার লে: কমান্ডার মাহমুদুল হাসান। গ্রেপ্তার আকবর বাদশা তারাব পৌরসভার বাঁশপট্টি এলাকার আব্দুল বারেক মিয়ার ছেলে। পুলিশের উপর হামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডেমরা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো: মিন্টু মোল্লা। মামলা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ডেমরা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রহমত মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল শীতলক্ষ্যা নদীতে চোরাই তেলবাহী ট্রলার ও নৌকাসহ বিভিন্ন নৌযানে অভিযান পারিচালনা করছিলেন। এমন সময় খবর পায় যে, সুলতানা কামাল সেতুর পূর্বপাশে বাঁশপট্টি থেকে আনুমানিক দুইশগজ দক্ষিণে নদীর তীরে জুয়া খেলার আসর বসেছে। খবরের সত্যতা নিশ্চিত হয়ে পুলিশ ওই জুয়াড় আসরে হানা দেয়। তখন পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জুয়াড়িরা পালিয়ে যায়। এসময় এসআই মো. আফিজুর রহমান জুয়া খেলার আলামত জব্দ করার সময় জুয়াড়িরা সঙ্গবদ্ধ হয়ে পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারিরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও এসআই মো. রহমত মিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধাঁরালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে। পরে আহত পুলিশ সদস্য রহমত মিয়াকে উদ্ধার করে ঢাকার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এহামলার ঘটনায় ডেমরা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে ভূমিদস্যু ও জুয়াড়িদের নেতা আকবর বাদশাকে প্রধান করে ৯ জনের নাম উল্লেখ ও ৩০ /৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি দিয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলা করেন। যার নম্বর- ৪৮। মামলার অন্য আসামিরা হলো- মো. আলামিন (৩২), সোহেল (৩০), আজমত আলি (২৫), মো. আব্দুল মালেক (৩৫), আব্দুর রহিম (৩৫), মিজনুর রহমান (২৪), জাকির হোসেন (৪০) ও ইয়াছিন (৩৮)। মামলার পর থেকেই আকবর বাদশা পলাতক ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রোববার দুপুরে র্যাব ও নৌ-পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। ডেমরা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো: মিন্টু মোল্লা জানান, আকবর বাদশা একজন ভয়ঙ্কর ভূমিদস্যু। এলাকায় তার একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। এবাহিনী মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করছে বীরদর্পে। তাছাড়া আকবর বাদশার নেতৃত্বে সুলতানা কামাল সেতুর দক্ষিণ পাশে বাঁশপট্টি এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে দীর্ঘদিন ধরে জুয়ার আসার চলে আসছে। এ আসরে দৈনিক লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা হয়। এলাকার সকল অপকর্মই পরিচালিত হচ্ছে আকবর বাদশার নেতৃত্বে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আকবর বাদশা গত ২০২০ সালে তারাব পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে। তার প্রতীক ছিল ডালিম। নির্বাচনের পর থেকেই সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। গড়ে তুলে সন্ত্রাসী বাহিনী। এ বাহিনীর অন্যায় অত্যাচারে এলাকার লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। কিন্তু সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেহ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। ভয়ঙ্কর আকবর বাদশা গ্রেপ্তারের খবরে এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। এলাকাবাসী তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।