রাজধানীর মিরপুরের স্বনামধন্য এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহফুজ আহমেদ। তার বাবা জানান, করোনার কারণে তার পরিবার দীর্ঘদিন গ্রামে ছিল। সেখানে নানান সমস্যার কারণে মাহফুজ পড়াশোনায় অনিয়মিত হয়ে পড়ে। এখন স্কুল খোলার ঘোষণায় ঢাকায় এসে আবারও ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হতে চাইলে প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়, ভর্তি হতে চাইলে আগের বকেয়া পরিশোধ করে ভর্তি হতে হবে।
এ অবস্থায় বকেয়া পরিশোধে অপারগতা জানিয়ে তিনি শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
এমন সমস্যায় পড়েছে মাহফুজের মতো আরও অনেক শিক্ষার্থী, যারা কোনো কারণে অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। তাদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে বলা হয়েছে, বকেয়া টিউশন ফি পরিশোধ করতে। ভর্তি জটিলতার এমন একাধিক অভিযোগ শিক্ষা অধিদপ্তরে জমা পড়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, এ ধরনের অভিযোগ আমাদের কাছেও এসেছে। যারা অনিয়মিত হয়ে পড়েছে তাদের জন্য ভর্তির দরজা খোলা থাকবে৷ যে শিক্ষার্থী যেদিন থেকে ভর্তি হবে, সেদিন থেকেই তার টিউশন ফি কার্যকর হবে। আগের বকেয়া শিক্ষার্থীদের পরিশোধ করতে হবে না। আমরা সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা করে খুব শিগগির এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করবো।
গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য জানায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। মারণ ভাইরাসটির বিস্তার রোধে ওই বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর সংক্রমণ পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি না হওয়ায় দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়। চলতি বছরের শুরুর দিকে সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে কয়েক দফা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
তবে সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান।