ভারতের ভূখণ্ড ও অবকাঠামো ব্যবহার করে বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রির জন্য নেপালের প্রস্তাবে রাজি হয়েছে দিল্লি।
বৃহস্পতিবার দিল্লিতে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল প্রচন্ড ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে এই সংক্রান্ত ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে রাজি হয় ভারত।
ত্রিপক্ষীয় এই চুক্তির আওতায় ভারতের সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে বাংলাদেশের কাছে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারবে নেপাল। এ বিষয়ে এদিন ভারত ও নেপাল একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
চুক্তির বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য হলো, নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ভারতীয় গ্রিডের মাধ্যমে বাংলাদেশে যেতে পারে।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, জলবিদ্যুৎ সহযোগিতা শুধু ভারত ও অন্যান্য দেশের মধ্যে নয়, সমগ্র অঞ্চলের মধ্যে সহযোগিতার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আঞ্চলিক সংযোগ জোরদার করার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে বিদ্যুৎ ও বিদ্যুৎ বাণিজ্যকে ব্যবহার করার চমৎকার সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে এটিই প্রথম প্রচেষ্টা।
হায়দরাবাদ হাউসে মোদির সঙ্গে বৈঠকের পর নেপালের প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে এই চুক্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। নেপালে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ ভারত ছাড়াও বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য সচেষ্ট দেশটি। অবশেষে তা বাস্তবায়িত হতে চলেছে।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিগগিরই নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু হবে। একই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হবে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লি সফরের সময় ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি উত্থাপন করেন। মে মাসের মাঝামাঝি নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নারায়ণ প্রকাশের ঢাকা সফরের সময়ও বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছিল। তিনি বাংলাদেশের কোম্পানিগুলোকে তার দেশের জলবিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থায় ভারত প্রথমবারের মতো এই ধরনের চুক্তিতে রাজি হওয়ায় বিদ্যুৎ বাণিজ্য উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করার জন্য ভারত ও নেপাল পারস্পরিক যোগাযোগ, জলবিদ্যুৎ, পেট্রোলিয়াম অবকাঠামো, আন্তঃসীমান্ত লেনদেন ব্যবস্থা ও সমন্বিত তল্লাশি চৌকি নির্মাণ সংক্রান্ত সাতটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।