নগর সংবাদ।। সৌদি আরবে নিজ ঘরে গাজী জাকির হোসেন (৩০) নামের এক প্রবাসী বাংলাদেশির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ। স্থানীয় সময় ৪ঠা আগস্ট বুধবার সকাল ১০টার দিকে রিয়াদের হাইলোজারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জাকিরের বড় ভাই দুলাল গাজী বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া অরুয়াইলের ধামাউড়া গ্রামের হাজী কাঞ্চন গাজীর পাঁচ ছেলের মধ্যে জাকির ছিলেন ৪র্থ। ১২ বছর আগে সে সৌদিতে পাড়ি জমায়। সেখান পাইপ ফিটিং ও কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে ঠিকাদার হিসেবে জনবল সাপ্লাই দিত। গত কিছুদিন আগেও বাংলাদেশ থেকে লোক নিয়েছে তার কোম্পানির জন্য। প্রবাসীরা জানান, জাকিরের রুমে সে সহ চার জন বাংলাদেশি থাকতেন। এছাড়াও একই বিল্ডিংয়ে তার অধীনে থাকা শ্রমিকরা থাকতেন। প্রতিদিনের মতো বুধবার ভোর ৫টায় অন্যান্য শ্রমিকদের ঘুম থেকে উঠিয়ে ডিউটিতে পাঠায় জাকির। তারপর জাকির তার কক্ষে ছিল। বন্ধু রাসেলকে নিয়ে বেলা ১১টায় কোম্পানির এক মালিকের সাথে দেখা করার কথা ছিল। জাকিরের কথামতো রাসেল সকাল ৯টায় জাকিরকে ফোন দেয়, ধরেনি। রাসেল জাকিরের খবর নিতে বাসায় যায়। অনেক ডাকাডাকি করলেও জাকির দরজা খোলেনি। পরে দুই-তিনজন প্রবাসী বাংলাদেশির সহযোগিতায় দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দেখে জাকিরে গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে রয়েছে। তারা আরো জানান, পেটের নাড়িভুড়ি বের হয়ে আছে। তখন তারা চিৎকার করতে থাকলে আশপাশের বাংলাদেশিরা জড়ো হয়। পুলিশকে খবর দিলে তারা লাশ নিয়ে যায়। এই ঘটনায় আশপাশের রুমের কয়কজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে। দুলাল গাজী বলেন, আমরা পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে চার ভাই সৌদি আরব ও কাতারে ছিলাম। আমি বর্তমানে দেশে আছি। জাকিরের সঙ্গে সৌদিতে আরও এক ভাই আছে। জাকির সৌদিতে বিভিন্ন কোম্পানিতে শ্রমিক দিয়ে ভালো রোজগার করতো। তার অধীনে অন্তত পাঁচ হাজার শ্রমিক কাজ করতো। তিনি আরো বলেন, সর্বশেষ গত তিন বছর আগে সে দেশে এসেছিল। তার বিয়ে করার কথা ছিল। আমরা তার বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এজন্য কন্যা পছন্দ করে রেখেছিলাম। দুই/এক দিনের মধ্যে বিয়ে তারিখ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা ভাইকে জীবিত অবস্থায় আর আরও দেখতে পেলাম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, জাকিরের রোজগারে ঈর্ষান্বিত হয়ে এলাকার লোকজন পরিকল্পিতভাবে জাকিরকে খুন করেছে। ইদানীং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কয়েকজন ছেলে জাকিরকে হুমকি দিচ্ছিল। তাদেরকে সৌদি পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে। আমি আমার ভাইয়ের খুনিদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তি কামনা করছি।