অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর মৃত্যুর শোকে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন মাসুদ ব্যাপারী নামের এক যুবক। বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। মাসুদ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নের পিঙ্গলাকাঠী গ্রামের সেলিম ব্যাপারীর ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শারমিন আক্তারের সঙ্গে মাসুদের দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তিন বছর আগে দুই পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়। সংসার জীবনে সুখের কমতি ছিল না। এরই মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হন শারমিন। এ খবরে দুই পরিবারেই খুশির জোয়ার বয়ে যায়। বাবা হবেন এ আনন্দে আত্মহারা ছিলেন মাসুদও। কিন্তু হঠাৎ সব এলোমেলো হয়ে যায়।
নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শারমিন ২২ দিন আগে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। স্ত্রী ও তার গর্ভে থাকা সন্তানকে হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন মাসুদ। বেশিরভাগ সময় কাটতো স্ত্রীর কবরের পাশে। ভালোবাসার মানুষটি কাছে না থাকার শূন্যতা তাকে যন্ত্রণা দিচ্ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে পরিবারের সবার অজান্তে তিনি বিষপান করেন। মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে গৌরনদী হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। তবে অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মাসুদ মারা যান।
তার স্বজনরা জানান, শারমিনের মৃত্যুতে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন মাসুদ। স্ত্রীর মৃত্যুর পর কাজকর্ম খাওয়া-দাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। কারও সঙ্গে কথা বলতেন না। শারমিনের কবর দেওয়া হয়েছিল বাড়ির অদূরে। মাসুদের বেশিরভাগ সময় কাটতো সেই কবরের পাশে। স্ত্রী শারমিনকে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন তিনি।
গৌরনদী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুশান্ত কুমার বলেন, পরিবারের সদস্য ও আশেপাশের লোকজনের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, মাসুদ তার স্ত্রী শারমিনের মৃত্যুর পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। স্ত্রীর মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। মাসুদের মৃত্যুর বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় তার মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।