মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী অহিদুল মুন্সীকে (৪০) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে মুন্সিগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ কাজী আবদুল হান্নান এ রায় ঘোষণা করেন।
অভিযুক্ত অহিদুল মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামের শাহ আলম মুন্সীর ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। মুন্সিগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক জামাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২৩ বছর আগে নিহত পারভীন বেগমের সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত অহিদুলের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে চার সন্তান রয়েছে। পেশায় ভ্যানচালক অহিদুলের সঙ্গে একই গ্রামের রাজা মিয়া ও ইনসান ডাফার জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল।
২০২১ সালের ২ জুন রাত ৮টার দিকে অহিদুল ভ্যান চালিয়ে বাড়িতে এসে প্রতিদিনের মতো রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে স্ত্রীর সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে আসামি স্ত্রীকে ঘুম থেকে জাগিয়ে থানায় মামলা হয়েছে, পুলিশ আসতেছে বলে পালিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে পড়েন।
বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটি করলা ক্ষেতে নিয়ে ধারালো কাঁচি দিয়ে পারভিনের গলায় পোঁচ দিয়ে হত্যা করেন। মরদেহ গুম করার জন্য পুকুরের কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখেন। পরে মরদেহ ভাসতে দেখে শ্রীনগর থানায় স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পারভিনের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহত পারভিন বেগমের ভাই জাহাঙ্গীর বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় হত্যা মামলা করেন।
এ ঘটনায় আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন অহিদুল। পরে আদালতে হাজির করলে আসামি বিচারকের কাছে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন বলেন, পারভিন বেগমকে তার স্বামী অহিদুল মুন্সী নির্মমভাবে হত্যা করেন। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আসামি অহিদুলকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।