নগর সংবাদ।। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে যেহেতু তিনি মৃত তাই বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা যখন হয় তখন জিয়ার নাম দেওয়া হয়নি বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঠিক পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যারা সেই সময় বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে, তারা যে কথাগুলো বলতো, যেসব ব্যাঙ্গ করতো, ৭৫’এর পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সেই কাজই করেছেন। তারা এ বিষয়ে এখনও এ পার্লামেন্টে বিএনপির এক নেতা বক্তৃতা দিলেন, আপনারা তা দেখলেন এটাই তাদের মানসিকতা। এরা স্বাধীনতা বিশ্বাসই করেন না। স্বাধীনতার চেতনাই বিশ্বাস করেন না। এদের অন্তরে এখনও সেই পিয়ার পাকিস্তান রয়েই গেছে। পাকিস্তানের গোলামিটাই তারা পছন্দ করেন। বিএনপির এমপি তার বক্তৃতায় তাদের হৃদয়ে যে পিয়ারের পাকিস্তান, সেটাই কিন্তু প্রমাণিত। আর খুনি, কেন খুনি বলবে না- এই আমার কাছে ছবি আছে। ৮৭’ সালে খালেদা জিয়া এবং কর্নেল ফারুক কথা বলছেন, সেই ছবি আমার কাছে। ফারুক এবং রশিদের বিবিসির ইন্টারভিউতে আছে জিয়াউর রহমান তাদের সঙ্গে ছিলেন। যখন মামলা হয় আমরা ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স যখন আমরা প্রত্যাহার করলাম, যখন মামলা করতে গেলাম, আমি বললাম জিয়াউর রহমানের নামও থাকতে হবে কারণ তিনিই আসল খুনি। তখন বলা হয়েছিল যেহেতু তিনি মৃত, তাকে আসামি করে কোনো লাভ নেই, আসামি করা যাবে না। তখন রেজাউল হক স্বরাষ্ট্র সচিব ছিলেন তিনি বললেন, তার নাম দেওয়া ঠিক হবে না, কারণ মৃত ব্যক্তির নাম মামলায় দেওয়া যায় না। সে কারণেই জিয়ার নামটা দেওয়া হয়নি। যেহেতু মৃত ব্যক্তির নাম দিয়ে লাভ নেই কিন্তু যখন সাক্ষী হয় তখন কিন্তু ওটা স্পষ্ট যে জিয়াউর রহমান এ হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। আর তাই যদি না হবে খন্দকার মোস্তাক তাকে একেবারে সঙ্গে সঙ্গেই সেনা প্রধান করবেন কেন। তাকে তো সেনা প্রধান করেছিল কাজেই এখন যতই অস্বীকার করুক, এখন অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। স্বাধীনতার চেতনাকে ধ্বংস করেছিল, জয় বাংলা স্লোগান ধ্বংস করেছিল, জাতির পিতার নাম নিষিদ্ধ করেছিল। ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিল আজকে তা আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশে আমরা জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা করি। এখানে আমার কোনো ধন্যবাদের প্রয়োজন নেই। আমি মনে করি এ প্রস্তাবটা সংসদে গ্রহণ হোক, সেটা আমি চাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো কৃতিত্ব চাই না। আমি একটা জিনিস চাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরে আসুক। মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের রক্তের অবদানটা ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর মুছে ফেলা হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযোদ্ধা এই কথাটা বলতে সাহস পেতেন না। অর্থাৎ বাংলাদেশ এমন একটা জায়গায় চলে গিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করে দেওয়া হয়েছিল। সংবিধানের চার মূলনীতি পর্যন্ত বিকৃত করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ৭৫’ এর পর এমন একটি বাংলাদেশ মনে হতো যে বাংলাদেশ কি স্বাধীন বাংলাদেশ। জয় বাংলার কথা আমার এখনও মনে আছে যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছয় দফা দিলেন, তখন সমগ্র বাংলাদেশ ঘুরে বেড়ালেন। সেই সময় শেখ ফজলুল হক মনিকে বঙ্গবন্ধু নির্দেশ দিয়েছিলেন এ স্লোগানটা ছাত্রলীগের মাধ্যমে মাঠে নিয়ে যাও। সেই সময় থেকে আমাদের স্লোগান জয় বাংলা। এটাই হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান। আমাদের জাতীয় পতাকা কি রকম হবে, বঙ্গবন্ধু তখন একটা নির্দেশনা দিয়েছিলেন যে, জাপান উদিত সূর্যের দেশ তাদের পতাকা হচ্ছে সাদার মধ্যে লাল আর আমাদের সবুজ বাংলাদেশ আমাদের পতাকা হবে সবুজের মধ্যে লাল। আসলে ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর একটা অগ্রসেনা দল। পাশাপাশি আমার-সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি এটাও কিন্তু আমাদের আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনেও বাজানো হয়েছে। কলিম শরাফি প্রখ্যাত গায়ক, তিনি খুব ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন আমার বাবার। যে কোনো অনুষ্ঠানে তিনি কলিম শরাফিকে বলতেন, কলিম এই গানটা গাও। তিনি কিন্তু এই চিন্তাটাই ধারণ করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশে এটাই হবে আমাদের জাতীয় সংগীত।