শনিবার (১৮ মার্চ) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ভাষানটেক বাজার মোড়ে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ।
স্মার্ট বাংলাদেশ মানে ব্র্যান্ডের প্যান্ট বা জুতা পরা নয় মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ মানে আমাদের শিক্ষায়-দীক্ষায় স্মার্ট হতে হবে। আমাদের স্মার্ট গভর্নেন্স হতে হবে, আমাদের সমাজকে স্মার্ট হতে হবে।তাহলেই আমরা স্মার্ট জাতিতে পরিণত হতে পারবো।
আলোচনা সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বললেও বঙ্গবন্ধুর কথা শেষ হবে না। যতদিন তিনি বেঁচে ছিলেন, ততদিন একটি ঘটনা ঘটেছে, ততদিন একটি ইতিহাস সৃষ্টি করে গিয়েছেন। কারণ, তিনি বাঙালির কথা বলতেন, তিনি বাংলাদেশের কথা বলতেন। তিনি এদেশকে কীভাবে স্বাধীন করবেন, সারাক্ষণ সেই কথাই চিন্তা করেছিলেন।
তিনি বলেন, যখন পাকিস্তান সৃষ্টি হলো এবং আমরা পূর্ব পাকিস্তান নামক একটি প্রদেশে এলাম, তখন থেকেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি চিন্তা শুরু করেছেন, কীভাবে দেশকে স্বাধীন করবেন। কারণ, ১৯৫২ সালে যখন আমাদের ভাষার ওপর আঘাত এলো, তখনই তিনি বুঝে গিয়েছিলেন আমাদের স্বাধীন হতে হবে৷ এরপর তিনি আন্দোলনের পর আন্দোলন করে গেছেন এবং সব জায়গায় সফলতা অর্জন করেছেন। কোনো আন্দোলনেই তিনি বিফল হননি।
বঙ্গবন্ধু শিশুদের অত্যন্ত ভালোবাসতেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিশুদের ভালোবাসতেন বলেই বঙ্গবন্ধু সবসময় শিশুদের দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে থাকতে পছন্দ করতেন। সেজন্য তিনি শিশুদের কথা চিন্তা করতেন। শিশুদের এগিয়ে যাওয়ার কথা তিনি বলেছেন। তাই আজকে সেই শিশু দিবসে আমরা আমাদের নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর কথা বলবো৷ বঙ্গবন্ধু কীভাবে আমাদের দেশকে স্বাধীন করেছিলেন সেই কথা বলবো। তাহলে ওদের মধ্যও বঙ্গবন্ধুর কথা গ্রথিত হয়ে থাকবে৷
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা বঙ্গবন্ধু করে গিয়েছিলেন। দেশ স্বাধীনের সাড়ে তিন বছরের মাথায় বাংলাদেশ যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল, তখনই তাকে প্রাণ দিতে হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করলেন। সারা বাংলাদেশকে একত্র করে আলোকিত করেছেন। আজকে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে বলেছেন, তোমরা যদি দেশ গড়তে চাও, উন্নত করতে চাও, তাহলে বাংলাদেশকে অনুসরণ করো। বাংলাদেশের নেত্রী শেখ হাসিনা কীভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, সেটাকে অনুসরণ করো। আজকে সারা পৃথিবীতে আমরা যেখানেই যাই, সেখানেই একটি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে, তোমাদের প্রধানমন্ত্রী কীভাবে সম্ভব করছেন? আমরা এক কথাই বলি, বঙ্গবন্ধু যেমন দেশকে ভালোবাসতেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীও সেভাবেই দেশকে ভালোবাসেন এবং এ দেশের জনগণকে ভালোবাসেন। সেজন্য সবাই তাকে হৃদয়ে ধারণ করে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে বলেছিলেন৷ আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে বলেই, আমরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। এখন স্মার্ট বাংলাদেশের কথা তিনি ঘোষণা করেছেন। বঙ্গবন্ধু আমাদের হৃদয়ে স্থান নিয়ে নিয়েছে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, বাংলাদেশের মাটি থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের সরকার দলীয় সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাদের খান ও মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান শিলা।